কর্মজীবী নারীদের জন্য খুশির খবর নিয়ে এসেছেন গবেষকরা। তাদের দাবি, পরিণত বয়সে যেসকল নারী চাকরিরত ছিলেন, গৃহিনীদের তুলনায় তারাই বৃদ্ধ বয়সে শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হন কম। পাশাপাশি কর্মজীবী নারীদের মাঝে শেষ বয়সে হতাশাগ্রস্ততাও দেখা গেছে তুলনামূলক কম, পেয়েছেন দীর্ঘায়ু।
গবেষণার প্রধান গবেষক, জার্মানির ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফল ডেমোগ্রাফিক রিসার্চ’য়ের গবেষক জেনিফার কাপুতো বলেন, “আমাদের গবেষণার অংশগ্রহনকারী নারীদের মধ্যে অনেকেই কাজ নিম্নমানের পরিবেশে, ছোট পদে এবং পুরুষ-শাষিত কর্মক্ষেত্রে। বিভিন্ন নেতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও এই কর্মজীবী নারীরা বৃদ্ধ বয়সে যে নারীরা তাদের জীবনে কখনই ঘরের বাইরে কাজ করেন নি তাদের তুলনায় স্বাস্থ্যবান ছিলেন।”
এই গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পরিণত বয়সি নারীদের নিয়ে করা ‘ন্যাশনাল লংডিটিউনাল সার্ভে’ নামক জরিপের তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করেন কাপুতো ও আর সহকর্মীরা। এই জরিপটি শুরু হয়েছিল ১৯৬৭ সালে, যাতে অংশ নিয়েছিলেন ৩০ থেকে ৪৪ বছর বয়সি ৫১০০ জন নারী। ২০০৩ সাল পর্যন্ত তাদের পর্যবেক্ষণের আওতার রাখেন জরিপকারীরা, যখন এই নারীদের বয়স হয়েছিল ৬৬ থেকে ৮০ বছর।
জরিপের তথ্য বিশ্লেষণে জানা যায়, গবেষণা শুরুর সময় থেকে ২০ বছর পর্যন্ত সময়ে যেসকল নারী চাকরিরত ছিলেন, তারা পরবর্তী ১৬ বছরে যারা কখনই চাকরি করেন নি তাদের তুলনায় শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগেছেন কম। যারা চাকরি করেন নি তাদের তালিকায় আছেন গৃহিনীরাও। আবার কর্মজীবী নারীদের ২০১২ সালের মধ্যে মৃত্যুবরণ করার ঝুঁকিও ছিলো অন্যান্যদের তুলনায় ২৫ শতাংশ কম।
কর্মক্ষেত্রে ক্রমাগত নেতিবাচক পরিবেশের সঙ্গে মোকাবেলা করতে হয়েছে যে নারীদের পরবর্তীতে তাদের স্বাস্থ্যের উপর অবশ্য এর ক্ষতিকর প্রভাব দেখা গেছে। কর্মক্ষেত্রে যারা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, নিজের কাজটা যাদের ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ ছিলো না তবুও করে গেছেন, বৃদ্ধ বয়সে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা মোটেও ভালো ছিলো না। আর জীবনের শেষ প্রান্তের দিকে যতই তারা এগিয়েছেন, তাদের স্বাস্থ্যের ততই অবনতি হতে দেখা গেছে।
‘ডেমোগ্রাফি’ শীর্ষক জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।