ফোনটা হাতে নিয়ে ইনস্টাগ্রামে ঢুকলেই যেন ঘড়ির কাটা দ্রুত ঘুরতে শুরু করে। চোখের পলকে চলে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু সময় কাটানোর দারুণ এই মাধ্যমটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
রয়্যাল সোসাইটি ফর পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইয়ং হেলথ মুভমেন্ট এর একটি গবেষণায় জানানো হয়েছে যে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর মধ্যে সবচাইতে খারাপ হলো ইনস্টাগ্রাম। অর্থাৎ ফেসবুক এর চাইতেও বেশী খারাপ প্রভাব ফেলে ইনস্টাগ্রাম।
যুক্তরাজ্যের ১৫০০ টিনএজারকে নিয়ে জরিপ চালানো হয়েছে। তাদের বয়স ছিল ১৪ থেকে ২৪। তাদেরকে জীবনযাত্রায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব এবং টুইটার এর প্রভাবের উপর ভিত্তি করে ৫ এর মধ্যে রেটিং দিতে বলা হয়েছিল। ঘুম, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, শারীরিক গঠন নিয়ে হীনমন্যতা ইত্যাদি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তারা রেটিং দিয়েছে। এতে দেখা গেছে সবচাইতে বেশী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে ইনস্টাগ্রাম।
ইনস্টাগ্রামে সেলেব্রিটিদের ছবি দেখে মেয়েরা তাদের ফিগার এবং ত্বক নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগছে। ফ্যাশন অনুকরণ করার সামর্থ্য না থাকায় বিষণ্ণতায় ভুগছে। অনেকে আবার অন্যের সঙ্গে তুলনা করছে নিজের জীবন। অন্যদের তুলনায় নিজেকে অসুখী ভাবার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। অথচ এসবই মিথ্যা, ফটোশপ করা, লোক দেখানো।
যাদের জীবনকে ‘পারফেক্ট’ মনে হয়, তাদের ভেতরেও লুকিয়ে থাকে কষ্ট, হতাশা, দুশ্চিন্তা। ফটোশপ করা ফিগার, অ্যাপ দিয়ে মসৃণ করা ত্বক দেখে নিজে হীনমন্যতায় ভোগার কোনো কারণ নেই। লোক দেখানো এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ায় নিজের জীবনের ছোট ছোট সুখগুলোকে অবহেলা করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া অনেকটা সিগারেটের নেশার মতো। কিছুদিন বিরতি দিলেও আবার ফিরে আসার পিছুটান থাকে। কিন্তু চাইলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। প্রয়োজন ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় দেয়া উচিত নয়। প্রতিদিন কতটা সময় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করবেন সেটা নির্ধারণ করে ফেলুন। খেয়াল রাখুন, সোশ্যাল মিডিয়াই যেন আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করা শুরু না করে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া