অধিকাংশ ব্যক্তিত্ব বিকারেই নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি দেখা যায়।
- লোকজনের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যা
- পরিবর্তিত জীবনযাত্রায় মানিয়ে নিতে সমস্যা
- হয় হ্যাঁ নয় না, এই দৃষ্টিভঙ্গিতে দুনিয়াকে দেখা
- দীর্ঘস্থায়ী সুস্থ সম্পর্কে না থাকতে পারা
- নিজের দোষ বুঝতে না পারা
- যেকোনও ব্যাপারে হয় অতি আগ্রহী নয়তো সম্পুর্ণ উদাসীন মনোভাব পোষণ করা
- অন্যের সমস্যা হচ্ছে তা বোঝার পরেও নিজের চালচলন পাল্টাতে না পারা
ব্যক্তিত্ব বিকার কেন হয়?
ছোটবেলায় বিভিন্ন দুর্ব্যবহার, অত্যাচার, হিংসাজনিত মানসিক আঘাত বা জিনগত কারণেও এই রোগ দেখা দেয়। বিভিন্ন জৈবিক, মানসিক এবং সামাজিক পরিবর্তনও এর কারণ।
জৈবিক কারণঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে বংশানুক্রমে বিভিন্ন জিনগত ত্রুটির কারণে অনেক সময় আমাদের মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারগুলি সঠিক ভাবে কাজ করে না। সেই কারণে অনেক সময় এই রোগ দেখা দেয়।
মানসিক কারণঃ শৈশবস্থায় পাওয়া কোনও মানসিক আঘাত অনেক সময় এই রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সামাজিক কারণঃ পরিবার থেকে পাওয়া ভালবাসা বা সুস্থ সম্পর্কে বহুদিন থাকা অনেক সময় এই রোগ এড়াতে আমাদের সাহায্য করে থাকে।
আমি কী করে বুঝব কারও ব্যক্তিত্ব বিকার আছে?
এই রোগের সূত্রপাত ছোটবেলায় বা কিশোর বয়সেই হয়ে থাকে। তখনই তা চিনতে পারা গেলে ভাল। আপনার
যদি মনে হয় কারও ব্যক্তিত্ব বিকার আছে তবে লক্ষ করুনঃ
- সবার সাথেই মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে কী?
- আবেগজনিত সমস্যায় ভুগছেন?
- কাউকে ভালবাসতে চেয়েও সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পারছেন না?
- মনমত সব না হলে নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন?
মনে রাখবেন উক্ত সমস্যাগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যেও থাকে। কাজেই এইগুলো দেখেই চট করে কোনও কিছু ভেবে বসা উচিত নয়। সবচেয়ে ভাল হবে এইরকম পরিস্থিতিতে যদি আপনি একজন অভিজ্ঞ মনোবিদের পরামর্শ নেন।
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি
এই রোগনির্ণয় পদ্ধতি খুবই জটিল কারণ আক্রান্ত ব্যক্তি বুঝতেই পারেন না যে তার চালচলনে আশে পাশের সবার অত্যন্ত সমস্যা হচ্ছে।
একজন অভিজ্ঞ মনোবিদ রোগী এবং তাঁর পরিচিত লোকজনেদের সাথে বিভিন্ন পর্যায় কথা বলে অন্তিম সিদ্ধান্তে উপনীত হন।
ব্যক্তিত্ব বিকারের চিকিৎসা
কথা বলে বোঝানোর মাধ্যমেই প্রধানত এই রোগের চিকিৎসা হয়ে থাকে। একজন অভিজ্ঞ থেরাপিস্ট রোগীর সাথে নিয়মিত কথা বলে তিনি কেমন বোধ করছেন তা জানার চেষ্টা করেন। এতে ব্যক্তিত্বের সমস্যা কে আলাদা করে চিহ্নিতকরণের ফলে চিকিৎসা এগিয়ে নিয়ে যেতে সুবিধা হয়।
দুশ্চিন্তা ও ইত্যাদি কারণে ওষুধপত্র দেওয়া হলেও সাধারণত ব্যক্তিত্ব বিকারের চিকিৎসায় কোনও ওষুধ লাগে না।
রোগীর যত্ন নেওয়া
একজন ব্যক্তিত্ব বিকারের রোগীর যত্ন নেওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেহেতু রোগীর বদ্ধমূল ধারনা থাকে যে তিনি সুস্থ তাই তাঁকে সঠিক ভাবে বোঝানো না গেলে চিকিৎসাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সমস্যার হতে পারে।
মনে রাখবেন ব্যক্তিত্ব বিকার ইচ্ছাকৃত জিদ নয়। কাজেই সঠিক সময় এর চিকিৎসা শুরু না করা গেলে রোগীর ব্যক্তিগত জীবনযাপনে প্রবল সমস্যা দেখা দিতে পারে।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে