দুশ্চিন্তা: সময় ও শ্রমের অপচয়

0
179
দুঃশ্চিন্তা দূর করার সহায়ক কিছু উপায়
দুশ্চিন্তা এমন এক নিরর্থক ও উদ্দেশ্যহীন বিষয় যা মানুষকে শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক দিয়েই পর্যদুস্ত করে তোলে।

দুশ্চিন্তা মানুষের মধ্যে আরো বেশি কর্মঠ হওয়ার অনুভূতি জাগালেও এর মাধ্যমে সমাধানের পথ আদতেও বের হয় না বরং এটি মানুষকে আরো হতাশার মধ্যে ফেলে দেয়।

ফ্লোরিডার মেন্টাল হেলথ্‌ কাউন্সেলর এলিজা বারব্যাশ বলেন, উদ্বেগে ভোগা রোগীদের নিয়ে কাজ করতে যেয়ে আমি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুশ্চিন্তা থেকেই তাদের উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে বলে নির্ণয় করতে পেরেছি। রোগীরা বলে, আমি আমার দুশ্চিন্তা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। অথচ যা নিয়ে দুশ্চিন্তা করা হচ্ছে তা যে কখনই ঘটবে না এমনটি ওই রোগীও জানে। আর এসব রোগীরা মাথা থেকে দুশ্চিন্তা সরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে এবং ব্যর্থ হয়ে উদ্বেগে ভোগে।

এলিজার মতে, ঠিক এটাই হলো দুশ্চিন্তা যা কোনোভাবেই মাথা থেকে সরানো যায়না। আর এটি কমানোর সর্বপ্রথম ধাপ হচ্ছে ‘দুশ্চিন্তা হলো উদ্দেশ্যহীন ও নিরর্থক বিষয়’ ধারণাটি মন ও মগজে গেথে ফেলা।
তিনি বলেন, দুশ্চিন্তা ভবিতব্য কোনো ঘটনা রুখে দেয়ার ক্ষেত্রে উপযুক্ত সমাধান দিতে পারেনা কখনই। এটি শুধুমাত্র মানসিক ও শারীরিক ক্ষতিসাধন করে থাকে। এটি কেবলমাত্র মানুষের মনে উদ্বেগ ও হতাশার জন্ম দেয় এবং শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে।

এলিজা বারব্যাশ দুশ্চিন্তা বলতে মূলত কয়েকটি বিষয়ের সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন যেমন :
১. এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করা যার কোনো অস্তিত্ব বর্তমানে তো নেইই, ভবিষ্যতেও হয়ত থাকবে না।
২. এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করা যার অস্তিত্ব থাকলেই যা কোনোভাবেই আয়ত্বের মধ্যে নেই।
৩. কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তার মাধ্যমে মানুষ হিসেবে উৎপাদনশীলতা বাড়ছে এমন অনুভব করা যা আদতে দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত।
৪. এবং দুশ্চিন্তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের অন্তর্ভূক্ত।

অনেক ব্যক্তিই ইচ্ছা করেই দুশ্চিন্তা করেন এটা মনে করে যে, এর মাধ্যমে তিনি আরো বেশি কর্মক্ষম হতে পারবেন এবং ভবিষ্যতের কোনো ঘটনার উপযুক্ত সমাধান বের করতে পারবেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা ব্যর্থ হয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছেন এবং মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

এলিজা বারব্যাশ দুশ্চিন্তার মতো নীরবঘাতক থেকে মুক্তি পেতে যেসব বিষয়ের আলোকপাত করেছেন সেগুলো হলো, বাস্তবসম্মত চিন্তাভাবনা করা। দুশ্চিন্তার বিষয়ে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে বর্তমান সময়কে বেশি গুরুত্ব দেয়া। মাথায় দুশ্চিন্তা ভর করলে চিন্তাধারাকে অন্যদিকে ফোকাস করা এবং সর্বোপরি একজন বিশেষজ্ঞের স্মরণাপন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ কিংবা ওষুধ গ্রহণ করা।

তথ্যসূত্র : সাইকোলজি টুডে, অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleমহামারীর এই দুঃসময়ে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর প্রভাব
Next articleপরচর্চার প্রবণতা: ক্ষতি কার?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here