মানুষের মন বোঝা যেমন কঠিন, তেমনি জটিল। জীবনে সফল হতে হলে আমাদের মন আসলে কি চায় সেটি বোঝা অত্যন্ত জরুরী।
আমাদের জীবনের প্রতিটা বাঁকে বাঁকে সুখ দুঃখ, সুসময় দুঃসময় এগুলো আমাদের চলার সাথী। এগুলোকে সাথে নিয়ে জীবন চলার পথে এগিয়ে যেতে হলে নিজেদের মনকে বোঝা, ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিয়ে লক্ষ্য বাস্তবায়নে সর্বান্তকরণে এগিয়ে যাওয়া দরকার। জীবনকে পূর্ণতা প্রদান করতে হলে আগে জানা প্রয়োজন আমাদের মনকে পূর্ণতা দিতে আসলে কি কি প্রয়োজন। বলতে বা ভাবতে যতোটা সহজ মনে করা হয়, বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে ততোটাও সহজ নয়।
অধিকাংশ মানুষই এটা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয় যে জীবনে সফলতা লাভের ক্ষেত্রে অন্যতম মূল বিষয় হল নিজের মনের ইচ্ছে বা চাওয়াকে সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া। কিন্তু যখন কারও জীবনে তাদের ক্যারিয়ার, সম্পর্ক, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য বিশেষ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আসে তখন এসব ক্ষেত্র গুলোর সাথে মানসিক ক্ষেত্রের যে বিশেষ এক সংযুক্তি আছে এটাই তারা ভুলে যায়। অথচ এই মানসিক ক্ষেত্র গুলোর সংযুক্তিই এসব ক্ষেত্রে আমাদের সফলতা পাবার মূল উপকরণ এবং আমাদের উৎসাহ ও আগ্রহের মূল কেন্দ্র বিন্দু। মনের এই ইচ্ছেই আমাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস যোগায় এবং ঐ কাজের প্রতি স্পৃহা আনে। কাজের প্রতি ভালবাসা আসে মনের এই টান থেকেই। আর এটাই সফলতা পাবার মূল কথা। তাই সফলতা পেতে মনের ইচ্ছের সাথে আমাদের জীবনের প্রতিটি ধাপের লক্ষ্যগুলোর একটা সমন্বয় থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে আমরা এই সমন্বয় বিধান করতে পারি সে সম্বন্ধে কিছু কৌশল আলোচনা করা যাক।
১) অপেক্ষাকৃত সহজ লক্ষ্য নির্ধারণ করাঃ
সত্যিই এটা সত্য যে, চেষ্টায় সব সম্ভব। কিন্তু এটাও সত্য যে যদি অপেক্ষাকৃত সহজ লক্ষ্য নির্ধারণ করে মনের শান্তি এবং জীবনের সাফল্য দুটোই পাওয়া যায় তবে কেন আমরা আমাদের সাধ্যের বাইরে থাকা কিছু নিয়ে মনের শান্তি নষ্ট করবো। অনেক সময় সামাজিক, পারিবারিক বিভিন্ন চাপে আমরা কোন কাজে এগিয়ে যেতে বা কোন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই যা মন থেকে আমরা মেনে নিতে পারিনা। এমন কাজে বহু কষ্টে হয়তো সফলতা আসে কোন এক সময় কিন্তু আমরা কখনোই সুখী হতে পারিনা। আমাদের মন সেটি মেনে নিতে পারেনা। আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সংযুক্তি সেটির সাথে থাকেনা। তাই কর্মক্ষেত্রে হয়তো আমরা একটা যায়গায় গিয়ে পৌঁছই কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমাদের জয় হয়না, আমাদের সফলতা আসেনা। তাই মনের বিরুদ্ধে না গিয়ে সহজভাবে, মানসিকভাবে মেনে নিয়ে তারপরেই কোন কাজে আগ্রহী হওয়া উচিৎ।
২) সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সঠিক পরিকল্পনা করাঃ
যখন একজন মানুষ মন থেকে কোন কাজের প্রতি উৎসাহ এবং আগ্রহ পায় তখন নিজ থেকে ঐ কাজে সফল হতে বিভিন্ন পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা গুলো সফলতার ক্ষেত্রে যতোটা জরুরী, পরিকল্পনা গুলোর সঠিক বাস্তবায়নও ততোটাই জরুরী। তাই সময় উপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই সিদ্ধান্ত গুলো বাস্তবায়ন করে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
৩) সাধ এবং সাধ্যের সমন্বয় করাঃ
অনেক সময় এমনটাও হয় যে মন থেকে এমন অনেক কিছুই ইচ্ছে হয় যেগুলো বাস্তব জীবনে করতে পারা নিজের সাধ্যের বাইরে থেকে যায়। আমাদের মনের সাধ এবং আমাদের সাধ্যের সমন্বয় করা কোন লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশী প্রয়োজন। এই সাধ এবং সাধ্যের সমন্বয় করেই লক্ষ্য নির্ধারণ করে সেই পথে একাগ্র চিত্তে চলতে হবে। তবেই সফলতা আসবে।
কথায় বলে মনের ও চোখ থাকে। সফল হতে হলে আমাদের মনের চোখ দিয়ে সব কিছু দেখতে হবে। মনের চোখে ভাললাগলে তবেই সেই কাজে প্রবৃত্ত হতে হবে। তবেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সহজ এবং আমরা সফল হতে পারবো।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে