আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঘটে নানা ঘটনা, দুর্ঘটনা। যা প্রভাব ফেলে আমাদের মনে। সে সবের সমাধান নিয়ে মনের খবর এর বিশেষ আয়োজন প্রতিদিনের চিঠি বিভাগ। এই বিভাগে প্রতিদিনই আসছে নানা প্রশ্ন। আমাদের আজকের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন- আহমেদ হাকিম। বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব।
সমস্যা: আমার বয়স ২৮ বছর, আমি একটা কর্পোরেট হাউজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছি। আমি সম্প্রতি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। আমার বউ সেদিন আমায় বলছিল, আমি নাকি রাতে ঘুমের মধ্যে কথা বলি। এটা আমার জানা ছিলো না। এর আগে কেউ আমায় এমন কথা বলেনি। অবশ্য সমস্যা হচ্ছে, প্রতিদিন নাকি আমার কথা বলার মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে আমি নাকি ঘুমের মধ্যে আমার অফিসের কারো সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে দিচ্ছি, আবার অনেক সময় নাকি হুটহাট বকাবকি করছি। এসব আমার বউয়ের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। কিছু সময় সে ভয় পেয়ে যাচ্ছে, ফলে রাতে ঘুমাতে পারছে না। যার ফলে সেও কিছুটা হতাশ হয়ে পড়ছে। এই বিষয়ে এখন আমার করণীয় কী? আর আমার এই সমস্যা কেনই বা হচ্ছে?
পরামর্শ: ধন্যবাদ, আপনার প্রশ্নের জন্য। রাতে ঘুমের মধ্যে কথা বলা খুব একটা অস্বাভাবিক বিষয় নয়। যদিও ডাক্তারি ভাষায় আমরা এক প্রকারের স্লিপ ডিজঅর্ডার হিসেবে ব্যাখ্যা করি। তবে এটার জন্য খুব বড় কোন ক্ষতি বা সমস্যা হওয়ারও সম্ভাবনা নেই।
অনেকে বুঝতে পারে না, এর পেছনে যে কোনো সমস্যা নেই। সাধারণত, কেউ যদি ঘুমের ভেতর কথা বলে, তবে সে সময়ের স্থায়িত্বকাল সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ড হতে পারে। এর চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিছু সময় কথার পুনরাবৃত্তি হয় বলে পাশের মানুষের সমস্যা হয়। এর পেছনে বিশেষ কোনো প্যাথলজি নেই। যদিও বাচ্চাদের এই সমস্যা বেশি হয়। তবে কারো মানসিক চাপ, স্ট্রেস, ডায়াবেটিস থাকলে বা জ্বরের মধ্যেও মানুষ আবোল তাবোল বলে থাকে। তবে এটা বড় কোনো সমস্যা নয়। আমাদের দেখতে হবে রোগীর অন্য কোন শারীরিক সমস্যা আছে কিনা।
আর যদি অন্য কোন শারীরিক সমস্যা না থাকে, তবে এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সেক্ষেত্রে মনের খবরে লেখা ‘স্লিপ হাইজিন’ পড়ে নিতে পারেন। এই স্লিপ হাইজিনে পরিপূর্ণ ঘুমের বিষয়ে বলা আছে। যেখানে কখন ঘুমাতে যাওয়া উচিত, ঘুমের আগে কী কী প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, ঘুমের সময় পাতলা জামাকাপড় পরবে, দিনে সঠিক পরিশ্রম করবে, সন্ধ্যার পর চা-কফি কম খাবে, বিছানা পরিষ্কার থাকবে, কতক্ষণ ঘুমানো উচিত এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।
সাধারণত, এই সমস্যার জন্য ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে কেউ যদি ওষুধ খেতে চান, তবে ট্যাবলেট ইসিটা (ESITA 5mg) সকালে ১টা করে নাস্তার পরে এক দেড়মাস খেয়ে দেখতে পারে কমে কিনা। এছাড়া অন্য কিছু ভাবলে আমাদের মতো মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। আপনার ক্ষেত্রেও একই পরামর্শ থাকবে।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে