খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়

খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়

অন্যান্য পেশা এবং ক্ষেত্রের ব্যক্তিদের মতোই সব ধরণের খেলার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদেরও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রয়োজন রয়েছে।

সারা বছর সব সিজনেই সমগ্র বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রকার খেলার আয়োজন হয়। স্টেডিয়াম বা স্টেডিয়ামের বাইরে দর্শকরা খেলোয়াড়দের খেলা উপভোগ করেন। দর্শকদের সামনে ভালো খেলা উপহার দিতে বা নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে একজন খেলোয়াড়কে শুধু শারীরিক ভাবেই নয় বরং মানসিক ভাবেও সুস্থ ও ফিট থাকতে হয়।

যেহেতু খেলার সাথে আবেগ এবং পরিপূর্ণ সুস্থতার সাথে মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, তাই একটি সুন্দর খেলা এবং খেলোয়াড় উভয়ের স্বার্থেই খেলোয়াড়রা যাতে মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় সেটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

যে কোন ধরণের খেলায়, হোক সেটি স্থানীয় পর্যায়ে কিংবা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, একজন খেলোয়াড় তার সর্বোচ্চ যোগ্যতার নিদর্শন রাখার মানসিকতা রেখেই খেলতে নামে। হার বা জিতের সাথে তার ব্যক্তিত্ব ও আবেগ ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকে।

একজন খেলোয়াড় সর্বদা জয়ের মানসিকতা নিয়েই খেলে থাকে। তাই হার কিংবা জিত, উভয় পরিস্থিতিই তার মানসিক অবস্থাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তবে খেলায় সব সময়ই যে একজন ব্যক্তি জিততে পারবে এমনটি ভেবে নেওয়ার বা আশা করার কোন সুযোগ নেই।

তাই যখন কোন খেলায় কেউ হেরে যায় বা নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়, এটি তার মানসিক অবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া তার নিকট দর্শকদের প্রত্যাশাও তার মানসিক চাপকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় এবং একই সাথে এই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থতা তাকে হতাশায় নিমজ্জিত করে।

এ কারণে মনস্তত্ত্ববিদগণ একজন খেলোয়াড়কে সব সময় হার কিংবা জিত উভয় পরিস্থিতির জন্যই মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ প্রদান করেন। আর এই লক্ষ্যে খেলোয়াড়দের মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে তাদের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।

নিচে এমন কিছু কার্যক্রম উল্লেখ করা হল, যেগুলো তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভূমিকা পালন করবে।

১. খেলোয়াড়দের জন্য নিয়মিত মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করতে হবে। যেন তারা তাদের ব্যক্তিত্ব, অস্তিত্ব, নিজেদের ভূমিকা, বিভিন্ন সম্পর্ক এবং আত্মবিশ্বাসকে সমুন্নত রাখতে পারে।

তারা যেন খেলোয়াড় জীবনের উত্থান পতনে প্রভাবিত হয়ে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে না পড়ে এবং হতাশা, মাদকাসক্তি, বিষণ্ণতা ইত্যাদি মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে নিজেদের ক্ষতির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।

২. শরীর, মন এবং মস্তিষ্কের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে পর্যাপ্ত ধারণা প্রদানের ব্যবস্থা করা।

৩. মানসিক চাপ কমাতে বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে অবহিত করা।

৪. প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য প্রতিটি খেলার শেষে কিংবা একটি নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে মানসিক স্বাস্থ্য চেকআপের ব্যবস্থা করা।

৫. মানসিক স্বাস্থ্য সংরক্ষণে কিংবা সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সিলর নিয়োগ করা।

৬. খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোন তথ্য গোপন ও সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

এসব উদ্যোগ গ্রহণ করলে আশা করা যায় খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকলে যেমন তারা তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে সমর্থ হবে তেমনি আমরাও ভালো মানের খেলা উপহার পাব।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/vitalogy/202109/meeting-the-mental-health-needs-athletes

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

Previous articleমনের খবর টিভিতে “দীর্ঘবিরতী, খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কেমন হবে শিক্ষার্থীর মানসিক প্রস্তুতি” বিষয়ক লাইভ অনুষ্ঠান
Next articleআইআইএফসি‘র পরিদর্শক দলের সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এণ্ড হাসপাতাল পরিদর্শন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here