জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা তাদের উপর চালানো হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের ফলে দীর্ঘ সময় ধরে মানসিকভাবে বির্পযস্ত। তাদেরকে বিভিন্ন পযার্য়ে মানসিক, স্বাস্থ্যগত, খাদ্য সহযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিও, প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগিতা করে আসছে। মানসিক ভাবে কিছুটা স্বভাবিক হওয়ার পথে থাকলেও বর্তমানে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মরণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে তারা মানসিকভাবে বির্পযস্ত হচ্ছে। কারণ প্রচুর সংখ্যক রোহিঙ্গাদের বসবাসের জায়গা ঘনবসতিপূর্ণ এবং তাদের মাঝে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে তারা অনেক আতংকে আছে।
রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট স্থানে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রাখা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে তাদেরকে হোম কোয়ারান্টাইন এর বিধি নিষেধ মেনে চলার নিদেশ দেয়া হচ্ছে, এর ফলে তারা আরও মানসিকভাবে ব্যাধিগ্রস্ত হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত কানিজ ফাতিমা নামে একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট জানান,তাদের এ মানসিকভাবে ব্যাধিগ্রস্ত যতটা না আগে ছিলো, এখন করোনা ভাইরাসের কারণে আরো বেড়ে যাচ্ছে। যদিও শুরু থেকে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা তাদের দেয়া হচ্ছিল, এখন আরো সচেতন ভাবে দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন এনজিও, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদেরকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে অবগত করছে। আইসোলেশন, হোম কোয়ারান্টাইন সম্পর্কে তাদের জানানো হচ্ছে। পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন থাকার ব্যাপারে জানানো হচ্ছে। শুরু থেকেই তাদেরকে হাত ধোয়ার ব্যাপারে সচেতন করা হতো, এখন করেনা ভাইরাসের কারণে সেটা আরো জোরদার করে, মাইকিং করে তাদেরকে সচেতন করা হচ্ছে। যখনই তাদের যে সেবার প্রয়োজন,তখনই ঐ সেবার সাথে করোনা সম্পর্কে তাদের সচেতন করা হয়। এ ব্যাপারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভলেন্টিয়ার, ডাক্তার, কাউন্সিলরা সহযোগিতা করছে।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট কানিজ ফাতিমার ধারণা মতে,যতটা না আমাদের দেশের সাধারন মানুষ ভাইরাস সম্পর্কিত নির্দেশিকা মানার চেষ্টা করে,তার চেয়ে রোহঙ্গিারা হয়তো বেশি মানার চেষ্টা করছে। কারণ ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার ভয়েই তারা সচেতন ভাবে চলার চেষ্টা করছে।
কানিজ ফাতিমা জাানা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তারা এখনো করোনা আক্রান্ত হয়েছে এরকম কারো খোঁজ পাওয়া যায়নি। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে তাদেরকে সবরকমের সুরক্ষা দেয়ার জন্য সব প্রতিষ্ঠানগুলো সচেতন ভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। যদি কোনো ভাবে কেউ আক্রান্ত হয়ে যায় কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা সেবা,মানসিক সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
লিখেছেন: সৈয়দা মুমতাহিনাহ সোনিয়া