করোনায় বেড়েছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা

করোনায় বেড়েছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা
করোনায় বেড়েছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা

সামাজিক বিধিনিষেধ বলবত থাকায় সবাইকেই দীর্ঘদিন ধরে ঘরে আবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। এতে বৃদ্ধি পাচ্ছে মানসিক চাপ সহ বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা। আর এই মানসিক সমস্যা থেকে বাড়ছে শারীরিক নির্যাতনের মত ঘটনার মাত্রা।

কোভিড-১৯ মহামারী সম্প্রতি চারিদিকে ছড়িয়েছে কিন্তু শারীরিক নির্যাতন অনেক পুরনো সামাজিক সমস্যা। অনেকেই বেশ আগের থেকেই এর শিকার। বর্তমানে আমরা যে অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছি, তাতে আমাদের সবারই স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে। মাসের পর মাস ঘরে আবদ্ধ থাকার ফলে অনেকেরই মানসিক ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অনেকেই মানসিক সন্তুলান হারিয়ে কাছের মানুষদের উপর হাত তুলছেন। এতে করে অনেকের জীবনই এখন অসুরক্ষিত হয়ে উঠেছে। অনেকের মাঝে গায়ে হাত তোলার প্রবণতা আগের থেকেই বিদ্যমান ছিল। মহামারীর কারণে গৃহবন্দী জীবন যাপন করায় তাদের মাঝে এই প্রবণতা আরও বেড়েছে। যা মোকাবেলা করা খুবই চ্যালেঞ্জিং!

করোনার এই দুঃসময়ে মানুষ সামাজিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। অধিকাংশ মানুষই চাকরী হারিয়ে দিশেহারা। এর উপর পরিবার ও সন্তান প্রতিপালন এবং দৈনন্দিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা আরও বেশী শারীরিক ও মানসিক চাপের সৃষ্টি করছে। এসব কারণে অনেকেই মানসিক সন্তুলান হারিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের উপর হাত তুলছেন। অনেকেই এমন প্রতিকূল অবস্থায় অসহায় জীবন যাপন করছেন যাদের জন্য ঘরের বাইরে করোনা আর ঘরের মাঝে একজন মানসিক সন্তলান হারানো অত্যন্ত ভয়ানক মানসিকতা সম্পন্ন মানুষ। জরীপে দেখা গেছে, করোনাকালীন এই সময়ে স্বাভাবিক অবস্থার থেকে আরও অনেক বেশী সংখ্যক শারীরিক নির্যাতনের পুলিশ কেইস হচ্ছে যা দিন দিন আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।

যেহেতু এই সময়ে বাইরে বের হওয়া, বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী বা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে যথেচ্ছ যোগাযোগ করা যাচ্ছেনা, তাই এই সুযোগটা অনেকের ক্ষেত্রেই শারীরিক নির্যাতনের সুযোগ করে দিয়েছে। এতে অনেকেই তাদের শক্তি এবং অধিকারের চর্চা করার নিমিত্তে এমন গর্হিত অপরাধে আগ্রহ পাচ্ছে।

অধিকাংশ মানুষ এই সময়ে কখনো দুশ্চিন্তা, কখনো হতাশা, কখনো বিষণ্ণতা আবার কখনো অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভুগছেন। যা তাদের মাঝে বিভিন্ন নেতিবাচক চিন্তাভাবনার জন্ম দিচ্ছে। যা নারী, পুরুষ উভয়ের জন্যই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঝুঁকি তৈরি করছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে পুরুষ বাইরের কাজ থেকে বিরত হয়ে ঘরে বসে আছে কর্মহীন হয়ে এবং নারীরা ঘরে বসেই বিভিন্ন কাজে অভ্যস্ত থাকায় সংসারের হাল এখন তারাই ধরেছে। পুরুষ তার প্রভুত্ব বজায় রাখতে এবং ক্ষমতার প্রদর্শন হেতু স্ত্রীর গায়ে হাত তুলছে। যা তাদের মানসিক শান্তি যোগাচ্ছে। তাই বলা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিকৃত মানসিকতার বিকাশ ঘটছে মহামারীর এই সময়ে। যা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের হার বাড়িয়ে দিয়েছে।

মহামারী আমাদের মাঝে বাহ্যিক বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টির পাশাপাশি মানসিক বিভিন্ন বিকার ও জন্ম দিচ্ছে যা নারী, পুরুষ উভয়কে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের দিকে ধাবিত করছে। সংসারে এবং সম্পর্কে ক্ষমতা প্রদর্শন এবং নিজের প্রভুত্ব বজায় রাখার প্রয়াস এই নির্যাতনের একটি বড় কারণ যা অনেক সুন্দর এবং সফল সম্পর্কের মাঝেও এই মহামারীকালীন সময়ে চিড় ধরাচ্ছে। মানসিক চাপ ও সংঘর্ষ এড়িয়ে কিভাবে এই  দুঃসময়ে একটি সুস্থ সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখা যায় সেই প্রয়াস নারী, পুরুষ উভয়কেই করতে হবে। মহামারীকে পরাজিত করে সম্পর্ক সঠিক দিশায় নিয়ে যেতে হবে।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleকোভিড-১৯ মহামারী এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা
Next articleকরোনা আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here