আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন কেন কিছু মানুষ যাই ঘটুকনা কেন সবসময় মূলত ভালো থাকেন? জীবন তাদের ওপর যত বাধা-বিপত্তিই ঠেলে দিক না কেন তারা সবসময়ই শীর্ষস্থান দখল করে রাখেন। তারা এই নীতিবাক্য অনুসরণ করে বাঁচেন, “জীবন যদি তোমাকে লেবু দেয়, তাহলে তুমি তা দিয়ে অর্গানিক লেবুর সরবত বানাও।” অথচ, এমন প্রচুর সংখ্যক লোক আছেন যাদের অনেক বড় বড় সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তারা কোনো পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নে সক্ষম হন না। এবং ব্যর্থ হন।
কিন্তু সফল লোকরা শুধু ভাগ্যের জোরেই সফল হন না। এমন কিছু অর্জনযোগ্য দক্ষতা আছে যেগুলো আয়ত্ব করতে পারলে আপনিও সফল হবেন। এর একটি হলো, ইতিবাচক মানসিকতা। কর্মদক্ষতা এবং প্রতিভা শুধু আপনাকে বিশেষ একটি পর্যায় পর্যন্ত এগিয়ে নেবে। কিন্তু বাকীটা আপনার মানসিকতার ওপর নির্ভর করবে। ইতিবাচক মানসিকতাই কাউকে সবচেয়ে বেশি জোরালোভাবে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
এখানে রইল এমন কয়েকটি কৌশলের বিবরণ যেগুলোর ব্যবহার করে আপনার মানসিকতার পরিবর্তন করতে ইতিবাচক ভূমিকা করবে।
পদক্ষেপ ১: সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণের মাধ্যমে ব্যর্থতা কমিয়ে আনুন ব্যর্থতার কারণে নেতিবাচক আত্মসমালোচনা বেশি হারে সৃষ্টি হয়। আর ব্যর্থতার পেছনে দায়ী আরেকটি বড় কালপ্রিট হলো ভুল লক্ষ্য নির্ধারণ। এর ফলে আমরা অনেক সময় নিজেদেরকে সফল হওয়ারই সুযোগ দেই না। লক্ষ্য নির্ধারণে ভুল করার মানে হলো ঠিকভাবে লক্ষ্য নির্ধারণে ব্যর্থতা। আমরা সাধারণত প্রায় সবসময়ই অস্পষ্টভাবে এবং বিশাল পরিসরে ও সুদুরপ্রসারি লক্ষ্য নির্ধারণ করি। তার চেয়ে বরং এই মুহূর্তে কী করার সম্ভব সে অনুযায়ী সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। উদাহরণত, কেউ যদি লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, আমি ইংরেজি শিখতে চাই এবং এর মাধ্যমে আমি বেতন বাড়াতে বা আরেকটি ভালো চাকরি পেতে চাই। দুটো লক্ষ্যই অনেক বড়। এবং সেগুলো পুরণে দীর্ঘ সময়ের দরকার। এর চেয়ে বরং আমি আজ থেকে প্রতিদিন এক ঘন্টা করে ইংরেজি শিখব। এভাবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই আমি ইংরেজিতে কথা বলা শিখব। এভাবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।
পদক্ষেপ ২: ইতিবাচকতা নষ্ট করে এমন উপাদানগুলো অপসারণ করুন সঠিকভাবে লক্ষ্যভাবে নির্ধারণ করার পর এবার আপনি সেই লক্ষ্য অর্জনের প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন সেটাই স্বাভাবিক। আর এটা করার একটি উপায় হলো অন্য কোনো লক্ষ্যের সঙ্গে তালগোল না পাকিয়ে ফেলা। আর এই কর্মপ্রবাহ অটুট রাখার জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যের ব্যাপারে সবসময়ই ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখতে হবে। এবং ট্র্যাকচ্যুত হওয়া চলবে না। সময় অপচয়কারী তৎপরতায় লিপ্ত হওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে মূল কৌশলটি হলো, আপনি যা চান সে ব্যাপারে নিজের সঙ্গে নির্মমভাবে সৎ হতে হবে। প্রতিদিন, অন্তত একটি সময় অপচয়কারী কাজের প্রতি “না” বলুন। একবার “না” বলতে পারলে আপনি হঠাৎ করেই যে স্বাধীনতা এবং দায় অবসান অনুভব করবেন তা পরেরবার কোনো কাজ করার দায়বদ্ধতার সঙ্গে তুলনা করে দেখুন।
পদক্ষেপ ৩: আপনার ভেতরের নেতিবাচক সমালোচনা বন্ধ করুনএকবার যখন আপনি জানবেন, আপনি সঠিক পথে আছেন, তখন নিজেকে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করাটাও সহজ।যার ফলে আপনার ইতিবাচক মানসিকতাও নষ্ট হয়ে যেতে পারে সহজে। যারা জীবনে সফল হয়েছেন তাদের প্রায় সকলেই এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। আপনি হয়তো কোনো একটা কাজের অর্ধেক করে ব্যর্থতার ভয়ে তা ছেড়েও দিতে পারেন। আর এখানেই শক্তিশালি ইতিবাচক মানসিকতার দরকার হয়। এর জন্য নিজের ভেতরের নেতিবাচক স্বরটিকে দূর করে ইতিবাচক স্বর প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নিজের ভেতরে এই কথাটি বলাতে হবে আমি যদি কাজটি অব্যাহত রাখি তাহলে আমি তা সুসম্পন্ন করতে পারব।
পদক্ষেপ ৪: দৃঢ়চিত্ত হন ইতিবাচক মানসিকতা কেউ জন্মসূত্রেই পান না। এটি ভাগ্য বা বংশগতি নয়। বরং এটি একটি অর্জনযোগ্য দক্ষতা। আপনি চাইলে চর্চার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসও বাড়াতে পারবেন।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে