অনলাইন গেমিং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ

0
29
একজন জুয়া আসক্তকে কীভাবে সহায়তা করা যায়

ডা. আসাদুল বারী চৌধুরী অমি
এমডি ফেইজ-বি রেসিডেন্ট, সাইকিয়াট্রি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা।

৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রোহান (ছদ্মনাম)। ৮ম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ- প্লাস পেয়েছিল। করোনা মহামারিতে ক্লাস বা পরীক্ষা কিছুই না থাকায় সময় কাটাতে ভিডিও গেইমের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

কিছুদিনের মধ্যেই আসক্ত হয়ে পড়ে পাবজি ও অন্যান্য গেইমে। দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাতো গেইম খেলে। পরবর্তিতে একটি কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ইভ-টিজিং, হ্যাং-আউট, বখাটেপনা, মাদক সেবন করত নিয়মিত। নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বাবা-মা বাধ্য হয়ে তাকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায়।

রোহানের মতো অবস্থা এখন অনেক ছেলে-মেয়েরই। দীর্ঘ দু-বছর করোনাকালে ঘরবন্দি জীবনে কয়েকগুণ বেড়েছে কিশোর প্রজন্মের অনলাইন গেমের প্রতি আসক্তি।

আর সেই আসক্তি অনেকের ক্ষেত্রেই এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে, বাধ্য হয়ে মা-বাবাকে সন্তানকে নিয়ে ছুটতে হচ্ছে মানসিক চিকিৎসকের কাছে। পরিসংখ্যান বলে, সময়ের সাথে সাথে কিশোরদের অনলাইন গেমের প্রতি আসক্তি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মানসিক স্বাস্থ্যও প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অনলাইন গেমিং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ

অনলাইন গেমিং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ

সময়ের আবর্তে জীবনে সবকিছু পরিবর্তন হচ্ছে। জীবনের রূপ ও বর্ণে পরিবর্তন এসেছে। সেই সাথে সাথে নতুন চিন্তা আসছে, পুরোনো চিন্তার জগতকে গ্রাস করছে।

বিকেলে মাঠে খেলতে যাওয়া, বন্ধুদের সাথে একসাথে বাইরে বেরোনো, পরিবারের সাথে বসে গল্প করা, সহপাঠীদের সাথে বিনোদন করা-এসব এই ডিজিটাল যুগে নতুন প্রজন্মকে যেন কেবল আড়ষ্ট করে রেখেছে। কখনও-বা কয়েকজন বন্ধু একসাথে বসে গল্প করলেও সেখানে দেখা যায় সবার নজর ফোনের স্ক্রিনে। এখন কেউ কাউকে সময় দেয় না। ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে এ গেইম আসক্তি দিন দিন বেড়েই চলছে।

আসক্তি কী?

‘আসক্তি’ প্রচলিত একটি সুপরিচিত শব্দ। ‘আসক্তি’ বলতে বোঝায় কোনো কিছুর প্রতি এমন তীব্র নেশা, টান বা মোহ যা থেকে সামান্য সময়ের জন্য বিচ্যুত হলে মানসিকভাবে কেউ চরম অসুস্থতা অনুভব করে। যেমন-মদ বা মাদক জাতীয় দ্রব্যাদির প্রতি কারোর নেশা থাকলে তাকে মাদকাসক্ত বলে। এ ধরনের আসক্তি সচরাচর ব্যাপার, কিন্তু ডিজিটাল আসক্তি বর্তমানে কিশোর-কিশোরীদের বা তরুণ প্রজন্মের জন্য এক মারাত্মক আসক্তি, যে ব্যাপারে আমরা অনেকেই জানি না।

ডিজিটাল আসক্তি

ডিজিটাল আসক্তি বলতে ডিজিটাল ডিভাইসের প্রতি এমন মোহ যা ব্যবহারকারীদেরকে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন করে তোলে এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তথা ভিডিও গেইম, অনলাইন বিনোদন, মোবাইল অপারেশন, ডিজিটাল গ্যাজেট ও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে নেশাগ্রস্ত করে রাখে।

এক কথায়, ডিজিটাল আসক্তিতে আক্রান্ত ব্যক্তি অনলাইন কার্যক্রমে এমনভাবে ঝুঁকে পড়ে যা তার দৈনন্দিন আবশ্যকীয় কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করা থেকে বিরত রাখে এবং তার স্বাভাবিক আচার-আচরণেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ডিজিটাল আসক্তির প্রধান তিনটা ধরন হচ্ছে-ফোন আসক্তি, ইন্টারনেট আসক্তি এবং সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি।

সব বয়সের মানুষের মধ্যে এ আসক্তি দেখা দিলেও কিশোর-কিশোরী শিক্ষার্থীরা এ আসক্তিতে বেশি আক্রান্ত। ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস-ঘটিত এই আসক্তিকে মনোবিজ্ঞানীরা অভিহিত করেছেন ‘ডিজিটাল মাদক’ নামে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) ভিডিও গেইমসের প্রতি তীব্র আসক্তিকে বিশেষ এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই অসুখের নাম দেয়া হয়েছে ‘গেইমিং ডিজঅর্ডার’ বা ‘গেইমিং ব্যাধি’।

বিভিন্ন ধরনের রোগের সমীক্ষার তথ্যভাণ্ডার ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজেস বা ‘আইসিডি’-র ১১তম সংস্করণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভিডিও গেইমিংয়ের প্রতি আসক্তিকে বিশেষ মানসিক রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি বা ১০০ মিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি যার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৯৩.৭০২ মিলিয়ন যা মোট জনসংখ্যার ৬২%।

অ্যাকাডেমিক ফলাফলে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব

সমস্যা কোথায়?

বিশ্বব্যাপী ইতিপূর্বে ক্ল‍্যাশ অব ক্ল‍্যান, মনস্টার হান্টার ওয়ার্ল্ড, ডাটা টু, ভাইস সিটি এবং হাঙ্গার গেইমসহ নাম না জানা অসংখ্য গেইমে মানুষের ভীষণ আসক্তি ছিল।

কল্পনার জগতে গিয়ে গেইমের প্রিয় চরিত্রের সাক্ষাৎ লাভের জন্য ২৪তলা ভবনের ছাদ থেকে কিশোরের লাফিয়ে আত্মহত্যা করা, অতিরিক্ত গেইম খেলায় বাবার বকুনি খেয়ে অভিমানী তাইওয়ানি কিশোরের নিজেকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া, অনলাইন ভিডিও গেইমের টাকা জোগাড় করতে ১৩ বছরের ভিয়েতনামি কিশোর কর্তৃক ৮১ বছরের বৃদ্ধাকে রাস্তায় শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার মানিব্যাগ চুরি এবং লাশ মাটিতে পুঁতে ফেলা, চীনা দম্পতির কম্পিউটার গেইমের অর্থের জন্য নিজেদের তিন সন্তানকে ৯ হাজার ডলারে বিক্রি করে দেওয়াসহ বহু মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক গেইম আসক্তির ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরিলক্ষিত হয়েছে।

এই আসক্তি কীভাবে বোঝা যায়?

যারা নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে বা গেইম খেলে, তাদের মধ্যে কিছু বিশেষ প্রবণতা বেশি থাকে:

  • এ বিষয়ে আগে থেকেই মাথায় কিছু ধারণা ধরে রাখা
  • আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় দেওয়া
  • ব্যবহার কমালে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়া
  • মন-মেজাজের হঠাৎ পরিবর্তনসহ বিষণ্ণতা
  • পারিবারিক সামাজিক সম্পর্ক অবনতি
  • কর্মক্ষেত্রে সমস্যা
  • তথ্য গোপনসহ অনুভূতিগুলো লুকনোর চেষ্টা
  • আসক্তরা সপ্তাহে প্রায় ৩৮.৫ ঘণ্টা কাটায় কম্পিউটারের সামনে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪.৯ ঘণ্টা।

কী কী সমস্যা হতে পারে?

মনোচিকিৎসকদের মতে, এই অনলাইন গেইম তাদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, তাদের আগ্রাসী করে তুলছে। তাদের মধ্যে সৃষ্টি করছে অসহিষ্ণুতা, ঘৃণ্য মনোভাব, সহিংসতা ও অপরাধ প্রবণতা। এর খরচ যোগাতে কেউ কেউ পা বাড়িয়ে দিচ্ছে অপরাধ জগতের আঁধারে।

অল্প বয়সি ছেলে-মেয়েরা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগাড় করতে পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করছে। টাকা না পেয়ে কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কাজে। স্মার্টফোন ও মোবাইল ডাটার দাম তো আছেই, সাথে কিছু কিছু গেমের একেকটি চরিত্র কিনতে চার-পাঁচশ’ টাকা লাগে। ফ্রি ফায়ারে ভার্চুয়াল অস্ত্র কিনতে লাগে দুই শ’ থেকে ৪ হাজার টাকা।

বেশ ক’বছর যাবত যে ‘কিশোর গ্যাং কালচার’ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিতদের মাথাব্যথার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তার অন্যতম কারণও কিন্তু অনলাইন গেইম। ২০১৯ সালের ১৫ই মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে ঢুকে গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালানো এবং সেই দৃশ্য ফেসবুক লাইভে প্রদর্শনের আইডিয়াটিকে অনেকেই বলছে পাবজি দ্বারা অনুপ্রাণিত।

এছাড়াও একটানা গেমিং সৃষ্টি করছে শারীরিক ও মানসিক নানান জটিলতা। দীর্ঘ সময় ধরে গেইমিংয়ে হাত ও কনুইয়ের পেশি ও পেশী-বন্ধনীতে ব্যথা ও প্রদাহ সৃষ্টি হয়, যা এক সময় দুর্বলতা ও অসাড়তাসহ স্থায়ী জখম হতে পারে। ব্যথা হতে পারে কাঁধ, ঘাড় ও পিঠেও।

গেমাররা কারপেল টানেল সিন্ড্রোমেও বেশি ভোগেন, যার ফলে কব্জিতে ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দেয়। এদের মাঝে চোখ জ্বালাপোড়াসহ দৃষ্টিজনিত সমস্যাগুলোও গেমারদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। একটানা অনেকক্ষণ স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার কারণে অনেকেই আক্রান্ত হয় ‘কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোমে’ যার কারণে দৃষ্টি আচ্ছন্ন ও ঘোলা হয়ে আসা, ভাবল ভিশন বা দুটো করে দেখা, চোখ শুকিয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

লম্বা সময় দৈহিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকায় গেমারদের মধ্যে আরো যে-সব স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছে তার মধ্যে আছে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, বিষণ্ণতা ইত্যাদি।

টিনেজারদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে মুটিয়ে যাওয়া বেড়ে যাওয়ার কারণও এই শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা। আর নিয়মিত রাত জেগে খেলার দরুন গেমারদের বড়ো একটি অংশ ভুগছে অনিদ্রা ও ঘুমের ব্যাঘাতে। ভিডিও গেমসে বিদ্যমান রক্তাক্ত হামলা, সহিংসতা, চুরি, যৌনতা ও প্রতারণা শিশুদের অন্যায় ও অপরাধে মারাত্মকভাবে উৎসাহিত করছে।

ভিডিও গেমসের মধ্যে প্রতি মুহূর্তে রং-বেরঙের দৃশ্যপট পরিবর্তন, সারাক্ষণ অবিশ্বাস্য গতিতে ছোটাছুটি, জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে থাকা-এসব শিশুদের মানসিকতায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। দেখা যাচ্ছে, কোনো কিছুতেই তাদের স্থিরতা থাকছে না। সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তারা তাড়াহুড়ো করছে। অল্পতেই তারা ধৈর্যহারা হয়ে পড়ছে। বাস্তব জীবনেও নিজের পরাজয়কে তারা মেনে নিতে পারছে না। আর এসব প্রবণতা শিশুদের ক্রমেই নেতিবাচক ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

মনের খবর

শারিরবৃত্তিক ও মস্তিষ্কে কী পরিবর্তন ঘটে?

মূলত মস্তিষ্কের ডোপামিন নামক রাসায়নিকের তারতম্য ঘটে বলে এই ধরনের আসক্তি সৃষ্টি হয়। গেইম খেলতে থাকলে মধ্য মস্তিষ্কের নিউক্লিয়াস অ্যাকাম্বেন্স থেকে ফ্রন্টাল লোব নামক অঞ্চলে ডোপামিনের প্রবাহ বেড়ে গেলে শুরুর দিকে ব্যবহারকারীরা নতুন এক ধরনের আনন্দ পায়। বারবার ব্যবহারে এই অঞ্চলে এক ধরনের লুপ সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তিতে আসক্তির পর্যায়ে নিয়ে যায়, এবং ব্যবহারকারীকে গেইম থেকে বিরত রাখতে পারে না।

চিকিৎসা কীভাবে করা যায়?

এই ধরনের অনলাইন গেমিংয়ে আসক্ত হওয়ার পর সেখান থেকে বের হয়ে আসাটা অনেক কঠিন। এ ক্ষেত্রে আমাদের সবার আগে প্রতিরোধ করতে হবে। এরপর প্রয়োজনে তাকে মনোচিকিৎসক এবং কাউন্সেলিংয়ের আওতায় আনতে হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

উদ্বেগ বা বিষণ্ণতার উপসর্গ অনুযায়ী অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট বা অ্যানজিওলাইটিক দেওয়া যেতে পারে। অনেক সময় হঠকারী কার্যকলাপের প্রবণতা কমানোর জন্য আন্টি- সাইকোটিক গ্রুপের ঔষধও দেয়া হয়।

আসক্তি থেকে প্রতিরোধের উপায়?

যেহেতু গেইমিং আসক্তি এই মুহূর্তে গুরুতর মানসিক রোগ, তাই এর কোনো শর্ট-কাট চিকিৎসা নেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্য সব আসক্তির মতোই এই রোগের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা শুরু করা যেতে পারে। তাদের মতে:

  • শিশুকে সময় দিতে হবে। মা-বাবা নিজেরাও যদি প্রযুক্তির প্রতি আসক্ত থাকেন, তবে সবার আগে নিজের আসক্তি দূর করতে হবে।
  • পরিবারের সবাই মিলে ক্যারাম, লুডো, দাবা, মনোপলি খেলার চর্চা করা যেতে পারে।
  • নিয়ম করে সবাই মিলে ঘুরতে বা বেড়াতে যাওয়া যায়।
  • সামাজিক সুরক্ষা নীতি বজায় মাঠে খেলার প্রতি উৎসাহ দেওয়া।
  • নিরাপত্তামূলক সফটওয়্যার ব্যবহার করা, যাতে ব্রডব্যান্ড থেকে কোনো নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা না যায়।
  • মোবাইল, ল্যাপটপ বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিলে তার একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া। বা একটা চুক্তিতে আসা, যাতে নিয়মগুলো পালন করে।

তাদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। তাদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষায় জড়িত হতে উৎসাহিত করা, ফেসবুকের ভালো ও শিক্ষণীয় কনটেন্টগুলো ব্যবহারে আগ্রহী হওয়া।

তবে সর্বোপরি, এ জাতীয় আসক্তি থেকে বাঁচাতে অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সরকার ইন্টারনেট ভিত্তিক এ জাতীয় বিনোদন ব্যবহারে কঠোর আইনি বিধি-নিষেধ জারি করতে পারে। তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং বিশ্বে তাদের সাফল্যের শিখরে পৌঁছানোর জন্য, মাদকের আসক্তিকে আর ‘না’ বলার সাথে সাথে ডিজিটাল আসক্তিকে আমাদের ‘না’ বলতে হবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, এখন ক্ষতটি ছোটো, একে ঔষধ দিয়ে নিরাময় করা যাবে, তবে ক্ষতটি বড়ো হয়ে গেলে তা নিরাময় করা কঠিন। শিক্ষক, পিতা-মাতা এবং আপামর জনসাধারণ সকলেই যদি নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে তবে আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে ডিজিটাল আসক্তি থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।

ইন্টারনেট আমাদের জীবনে এক নতুন আবশ্যকতা। এই যে কিছুদিন আগে সারা দেশে এক ক্রান্তিকালে হঠাৎ করে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে গেল, তখন মানুষ বুঝতে পেরেছে কতটা নির্ভরশীল ছিল ইন্টারনেটের ওপর। আমরা না চাইলেই এখন দৈনন্দিন হাজারো কাজে অনলাইনের ওপর নির্ভর করে থাকি।

ইন্টারনেট বা গেইম আসক্তি মাদকাসক্তির মতোই একটি সমস্যা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গেইমের প্রতি কম সময় ব্যয় করা সম্ভব হলে, সম্পূর্ণভাবে এই গেইমিং থেকে সরে এলে তবেই ‘গেইমিং ডিজঅর্ডার’ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

Psychotherapy ads

  • এপয়েন্টমেন্ট নিতে এখানে ক্লিক করুনঃ APPOINTMENT

আরও পড়ুন:

Previous articleসোশ্যাল মিডিয়া কর্মজীবনে পজেটিভ ও নেগেটিভ প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি করছে
Next articleসবসময়ই মাথা চাপ দিয়ে থাকে মনে হয় অনেক টেনশন মাথায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here