বয়সের সাথে সাথে মনে রাখার ক্ষমতা বা স্মৃতি শক্তি কমছে? আসুন কিভাবে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়ে যাওয়া স্মৃতি লোপ জনিত সমস্যা হ্রাস করা যায় সে সম্পর্কে জেনে নেই।
আমরা সবাইই কোন না কোন ভাবে এই ভুলে যাওয়া বা স্মৃতি শক্তি লোপ জনিত সমস্যায় ভুগি। কখনো দেখা যায় মাসিক বিদ্যুৎ বিল দিতে কেউ ভুলে গেছে, তো বাজার থেকে প্রয়োজনীয় কোন বস্তু আনতে ভুলে গেছে। আবার অনেকে সকালে কি খাবার খেয়েছে সেটা ভুলে যায়।
আবার বাসার তালা ঠিক ভাবে লাগিয়ে বের হয়েছি কিনা সেটি মনে করা মুশকিল হয়ে যায়। এভাবে সব বয়সী মানুষের মাঝেই ভুলে যাওয়ার বা স্মৃতি শক্তি লোপ পাওয়ার সমস্যা প্রায়শই দেখতে পাওয়া যায়। এটা একদম স্বাভাবিক। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যাগুলো যখন একটু বেড়ে যায় অনেকেই ভয় পান যে এটি কোন রোগ, যেমন- অ্যালজায়মার-এ পরিণত হল না তো?
তবে আশার কথা হল, এসব সাধারণ ভুলে যাওয়ার মাত্রা কিছুটা বেড়ে গেলেও সেটিকে কোন মানসিক রোগ বলা যায় না। অ্যালজায়মারের মতো রোগগুলোর আরও বিশেষ কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেগুলো দেখে সহজেই এই সাধারণ ভুলে যাবার বা স্মৃতি শক্তি লোপ পাওয়া সমস্যা থেকে একে পৃথক করা যায়।
বয়সের সাথে বেড়ে যাওয়া এই সাধারণ ভুলে যাবার সমস্যা বা স্মৃতি শক্তি লোপ পাওয়াকে কমাবার জন্য নিচে কিছু কৌশল তুলে ধরা হল। যেগুলো এই সমস্যা কিছুটা হলেও কমাতে সহায়তা করবে।
ভেষজ চিকিৎসা
স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির জন্য চীনসহ অনেক দেশেই ভেষজ চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হলুদ, আদা ইত্যাদি ভেষজ মশলা জাতীয় উদ্ভিদে অনেক বেশী পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটোরি উপাদান রয়েছে। যা আমাদের স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই এগুলো নিয়মিত সেবনে ভুলে যাওয়ার সমস্যা হ্রাস হতে পারে।
স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে স্মৃতি শক্তি হ্রাস বৃদ্ধি জনিত সমস্যা কমানোর অর্থ হল স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা। যা ডিমেনশিয়ার মতো সমস্যাগুলো থেকে আমাদের দূরে রাখবে। স্বাস্থ্য সম্মত আহার যেমন- পরিমিত প্রোটিন, ফলমূল, শাক সবজি গ্রহণসহ নিয়ন্ত্রিত ফ্যাট ও শর্করা শুধু স্মৃতি শক্তি ভালো রাখতেই সহায়তা করবে না বরং অন্যান্য রোগ ব্যাধি থেকেও আমাদের মুক্ত রাখবে।
নিয়মিত শরীর চর্চা
শরীর চর্চার নানাবিধ উপকারিতার মধ্যে অন্যতম হল এটি আমাদের বিশেষত বয়স্ক মানুষদের বিষণ্ণতাসহ নানা ধরণের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আবার স্মৃতি লোপসহ বহুবিধ সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে। তাছাড়া শরীর চর্চা পরিপাক ক্রিয়া ভালো রাখে, মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং নিদ্রা হীনতাও দূর করে। যা মনে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
সব সময় মনে রাখতে হবে, বয়স বাড়ে আমাদের শরীরের, মনের নয়। তাই বয়স বৃদ্ধির প্রভাব যেন আমাদের মনের উপর না পড়ে সে লক্ষ্যে সবারই প্রয়াস করতে হবে। আর উন্নত স্মৃতি শক্তি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপনের পথে একটি বিশেষ হাতিয়ার। যা একজন মানুষকে পূর্ণ রূপে বয়স বৃদ্ধির সময়টাকেও উপভোগ্য করে তুলতে পারে।
তাই উপরের কৌশলগুলো অবলম্বন করে মনে রাখার অভ্যাসকে আরও সমুন্নত করে তুলতে হবে।
লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/how-healing-works/202001/how-maintain-memory-you-age?collection=1146785
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা