বিএপির এজিএম-এ মিলনমেলা: তিন কথাসাহিত্যিককে সম্মাননা

কথাসাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনজন মনোচিকিৎসককে সম্মাননা প্রদান করেছে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস (বিএপি) । সম্মাননা পেয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম তিন কথাসাহিত্যিক ও মনোচিকিৎসক অধ্যাপক ডা. আনোয়ারা সৈয়দ হক, অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল ও অধ্যাপক ডা. মামুন হুসাইন।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ সাইকিয়াট্রিস্টসের (বিএপি) ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় ২৯ এপ্রিল।
সাভারের ব্রাক সিডিএমে অনুষ্ঠিত এ সভায় তিনজনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

দিনব্যাপী এ বার্ষিক সভায় আলোচনার বাইরেও ছিলো গেমস, র‌্যাফেল ড্রসহ বর্ণাঢ্য আয়োজন। সংগঠনের সাথে যুক্ত সাইকিয়াট্রিস্টসগণ সারা দেশ থেকে এসে এই সাধারণ সভায় যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ সাইকিয়াট্রিস্টসের কোষাধ্যক্ষ ডা. অভ্রদাশ ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল এবং সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী।
বক্তাদের আলোচনায় নবীন মনোচিকিৎসকদের চাকুরী নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে উঠে এসেছে। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণার ওপর ‍গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
ডা. বুশরা সুলতানা ও ডা. ওয়ালিউল হাসনাত অনুষ্ঠানে একাডেমিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সম্মাননা প্রাপ্ত আনোয়ারা সৈয়দ হক একজন খ্যাতনামা বাংলাদেশী মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও শিশুসাহিত্যসহ তার অধিকাংশ রচনায় একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি ২০১০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সহধর্মিণী।

[smartslider3 slider=3]

‘হেলাল যাচ্চিল রেশমার সাথে দেখা করতে’, ‘অন্ধকারে যে দরোজা’, ‘শূন্যতার সাথে নৃত্য’ ইত্যাদি তার আলোচিত গ্রন্থ।
সম্মাননা প্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল ১৯৬০ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় জন্মগ্রহন করেন । তিনি ১৪১৮ বঙ্গাব্দের জন্য সম্প্রতি অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য অর্জন করেছেন । পেশাজীবনে তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক (হেড অব সাইকিয়াট্রি, একাডেমিক কোর্স ডিরেক্টর, এমডি/ রেসিডেন্সি, সাইকিয়াট্রি ) ।
গল্প, উপন্যস, প্রবন্ধ, কলাম, কিশোরদের উপযোগী গল্প, কিশোর উপন্যাস, বিজ্ঞান ও গবেষণাসহ নানা বিষয়ে লেখালেখিতে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি । তার মোট বইয়ের সংখ্যা ৪৭ টি । এর মধ্যে কথাসাহিত্য ২৭ টি, শিশু-কিশোর বিষয়ক ১০ টি, অন্য বইগুলো মনস্তত্ত্ব বিষয়ক।
ইতোমধ্যে তিনি পেয়েছেন সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১৪, এম নুরুল কাদের ফাউন্ডেশন শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১২ সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার । পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘উড়াল বালক’ কিশোর উপন্যাসটি স্কলাস্টিকা স্কুলের গ্রেড সেভেন ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি (SEQAEP) কর্তৃক ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ্য হিসেবে রয়েছে।
সম্মাননা প্রাপ্ত আরেক কথাসাহিত্যিক মামুন হুসাইনের জন্ম ১৯৬২ সালে কুষ্টিয়া জেলা সদরে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক। ২০০৪ সালে পেয়েছেন কাগজ সাহিত্য পুরস্কার। ‘নিক্রপলিস’ উপন্যাসের জন্য ২০১১ সালে পেয়েছেন ‘বাঙলার পাঠশালা- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস পুরস্কার’। সম্প্রতি তিনি গ্রহণ করেছেন কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার-২০১৭।
তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে- ‘শান্ত সন্ত্রাসের চাঁদমারি’, ‘মানুষের মৃত্যু হলে’, ‘কয়েকজন সামান্য মানুষ’, ‘বালকবেলার কৌশল’, ‘নিরুদ্দেশ প্রকল্পের প্রতিভা’, ‘নিক্রপলিস’, ‘হাসপাতাল বঙ্গানুবাদ’ ইত্যাদি।

Previous articleঅটিজমের সাথে অন্যান্য রোগের সম্পর্ক নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
Next articleবজ্রপাতে যা করবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here