গত জুন মাসের এক তথ্যমতে দেখা যায় ইংল্যান্ডে প্রায় আড়াই লক্ষ শিশু ও তরুণ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছে। বিশেষ করে এনজাইটি, ডিপ্রেশন এবং খাওয়াদাওয়া জনিত সমস্যার কারণে।
ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের তথ্যমতে, শিশু ও তরুণদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দ্যা গার্ডিয়ান পত্রিকার পক্ষ থেকে মানসিক রোগের চিকিৎসা নিয়েছে এমন কিছু তরুণ, তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের কাছে জানতে চায় মানসিক রোগের চিকিৎসায় তাদের অভিজ্ঞতার কথা।
নিচে তাদের কয়েকজনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরা হলো-
Beth Ackers, বয়স ১৮
গতবছর আমি ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম কারণ আমি বিষণ্নতা ও হতাশায় ভুগছিলাম। আমি বুঝতে পারছিলাম না যে আমার সাথে এসব কি হচ্ছে। আমার সাথে আমার মাও এসেছিল। আমাকে জরুরিভাবে শিশু কিশোর মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়।আমাকে ৬ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল কিন্তু ১২ সপ্তাহ পার হলেও তারা কিছুই বলেনি। আবার যোগাযোগ করলে তারা পুনরায় পর্যবেক্ষণ করতে পাঠায়। সবশেষে তারা বলে যে, আমার অন্য চিকিৎসা দরকার। গত জুনে যোগাযোগ করলে আমি তাদের কোনো উত্তর পাই নি। এখন আমার বয়স ১৮ আর আমি জানি না যে আমার কি হবে। পুরো অভিজ্ঞতা আমাকে হতাশ করেছে। মনে হচ্ছে যে, আমি অবহেলিত হচ্ছি। এখানে অনেক অব্যবস্থাপনা রয়েছে। আমার পক্ষে প্রাইভেটে ডাক্তার দেখানও সম্ভব হচ্ছে না।
Azia, বয়স ১৭
২০১৪ সালে আমি হতাশা ও বিষণ্নতা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাই। আমি স্থানীয় মানসিক সহায়তা কেন্দ্রে যাই। কিন্তু এখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো ছিল না। তারা আমাকে প্রথমে বেশ কিছু থেরাপি দেয়। কিছুদিন পর বুঝতে পারি যে, এটা আমার জন্য সঠিক না।এরপর মাসখানেক পর আরেকটি দেয়া শুরু করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, বয়স ৫১
আমার সন্তান মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। তাকে নিকটস্থ সহায়তা কেন্দ্রে নিয়ে যাই। আমি মনে করি এখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্রমাগত অবনতি ঘটছে।এখানকার থেরাপি ব্যবস্থা খুব একটা ভালো না।
Tracey Lawrence, বয়স ৩১
মানসিক সহায়তা ব্যবস্থা এখন একটি ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের উচিৎ এ ব্যাপারে আরো নজর দেয়া। এখানকার লোকদের আরো বেশি প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এখানে অনেক যোগাযোগ করে সময় নষ্ট করেও কোনো ফল পাওয়া যায় না। অনেকসময় তারা কেবল “দুঃখিত”বলেই থেমে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
আমি মানসিক সহায়তা কেন্দ্রে কাজ করি। কিন্তু আমরা অনেক দূর্ভাগ্যবান। আমরা আসলে যথাযথ চিকিৎসা দিতে পারি না। এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ ও চাহিদা রয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক ধীর গতির ও স্টাফরা খুব একটা সৎ না। আমাদের অনেক দূর্বলতা ও চাপ রয়েছে। এখানে উপকরন পর্যাপ্ত না হলেও লোকদের আকাঙ্ক্ষা অনেক বেশি।
তথ্যসূত্র- দ্যা গার্ডিয়ান
https://www.theguardian.com/society/2016/oct/03/childrens-mental-health-in-crisis-readers-share-their-stories
আব্দুল্লাহ আল মামুন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম