কম ওজনের শিশুদের থাকে অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা: গবেষণা

কম ওজনের শিশুদের
কম ওজনের শিশুদের থাকে অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে মার্কিন বিজ্ঞানীদের এক গবেষণা থেকে জানা গেছে।

সদ্যজাত যেসব শিশুর ওজন চার পাউন্ডের কম তাদের প্রায় পাঁচ শতাংশ আক্রান্ত হয় অটিজম-এ৷ অর্থাৎ, স্বাভাবিক ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুদের ক্ষেত্রে এর হার মাত্র ১ শতাংশ বলে জানিয়েছেন গবেষকরা
যুক্তরাষ্টের নিউ জার্সির কম ওজন নিয়ে ভূমিষ্ঠ ৮৬২টি শিশুকে তাদের ২১ বছর বয়স পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা এই তথ্য পান৷ স্বাভাবিকভাবেই, ‘পেড্রিয়াটিক সাময়িকী’-তে প্রকাশ এই তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয় বিভিন্ন মহল থেকে৷ ভারতে বসবাসকারী ড. বিভাস ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘‘অল্প ওজন নিয়ে ভূমিষ্ঠ বেশিরভাগ শিশুই পরবর্তী সময়ে অটিজম রোগে ভোগে – এ যেমন সত্য নয়, আবার অটিজম-এ ভোগা সব শিশুই অল্প ওজন নিয়ে জন্মেছে তাও হলফ করে বলা যায় না৷”
তাই কম ওজনের শিশুদের অর্থাৎ কম ওজন নিয়ে জন্মানোর সঙ্গে অটিজম-এর সম্পর্ক নিশ্চিত করতে আরো গবেষণার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি৷ এছাড়া, স্বাভাবিক ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুর চেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুদের মধ্যে অটিজম রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি, সেটা একরকম অস্বীকারই করেন ড. ভট্টাচার্য্য৷ বরং তিনি জানান, অটিজম একটি জন্মগত সমস্যা৷ মায়ের গর্ভে মস্তিস্কের বৃদ্ধি বা পূর্ণতা লাভ বাধাগ্রস্থ হলে শিশুদের এ রোগ দেখা দেয়৷ সাধারণত অটিস্টিক শিশুদের বুদ্ধিমত্তা কম থাকে – এ কথা প্রচলিত হলেও, কিছু ক্ষেত্রে অটিস্টিক শিশুরা গণিত, সংগীত বা ছবি আঁকায় পরদর্শী হয়৷
প্রতি হাজারে ২/১ জন অটিস্টিক শিশু জন্মগ্রহণ করে থাকে বিশ্বে৷ আর ড. বিভাস ভট্টাচার্য্যের কথায়, ‘‘এ রোগের কারণ সম্পর্কে এখনও কোনো নির্দিষ্ট বিষয় চিহ্নিত করা না গেলেও, জিনগত কারণে অটিজম হতে পারে৷ এছাড়া, খাদ্যাভাস, পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা, পারদের বিষক্রিয়া, ভিটামিনের অভাব, গর্ভাবস্থায় মায়ের হাম হওয়া ইত্যাদিও অটিজম-এর কারণ হতে পারে৷’’
জন্মের ১৮ মাস থেকে ৩ বছর বয়সের মধ্যেই সাধারণত বাবা-মা বুঝতে পারেন যে তাঁদের সন্তানের অটিজম আছে কি না৷ শিশুটির বার বার খিচুনি হলে, চারপাশের পরিবেশ এবং মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে না উঠলে, ইশারায় বা স্বল্প কথা বলতে পছন্দ করলে, বার বার একই কাজ করতে থাকলে অথবা জিনিস-পত্র চাটতে ভালোবাসলে – তার এ রোগ হয়েছে বলে ধরা যেতে পারে৷
ড. ভট্টাচার্য্য জানান, ‘‘দুঃখের বিষয়, এখনও পর্যন্ত অটিজম-এর কোনো চিকিৎসা-পদ্ধতি আবিষ্কার হয়নি৷ তাই একটি অটিস্টিক শিশুকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা না গেলেও, সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে সস্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব৷”
সূত্র: ডয়চে ভেলে

Previous articleহতাশার সময় যেসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন
Next articleআজ বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here