ওপিহাই কলেজের নির্দেশিকা কাউন্সিলর তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতার জন্য নিজেকে তৈরী করছেন। তিনি নিউজিল্যান্ডের ‘মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন অব নিউজিল্যান্ড’ এর জন্য তহবিল গঠন করার জন্যএবং তহবিলে অর্থের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য কিলিমাঞ্জারো পর্বতে উঠার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
লন্ডনের প্রাক্তন পুলিশ অফিসার এবং হাই স্কুল শিক্ষক জো শার্প যার বয়স ৫৩ বছর তিনি গত ৬ বছর ধরে নির্দেশক কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এই বছর তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগে তাদের চিকিৎসার জন্য তহবিল গঠন করবেন। তিনি ও ‘মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন অব নিউজিল্যান্ড’ এর দেয়া চ্যালেঞ্জ কিলিমাঞ্জারো পর্বতে উঠার জন্য নিজের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “এই মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন সবসময় আপনার জন্য সেখানে থাকবেন”।
তিনি তার স্বাস্থ্য ও ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য ছোট ছোট পাহাড়ে উঠে অনুশীলন করছিলেন। ব্যাগের ভেতর বিভিন্ন জিনিসপত্র ঢুকিয়ে তিনি হাঁটার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি জানতেন এবং আশা করছিলেন কিলিমাঞ্জারো পর্বতে উঠার ব্যাপারটই বেশ কঠিন হবে।
তানজানিয়ার সুপ্ত আগ্নেয়গিরি, যা আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, ৫৮৯৫ মিটার উচু, আওরাকী-মন্ট কুকের চেয়ে ২১৭১ মিটার বেশি।
শার্প ২০ জন নিউজিল্যান্ডবাসীর সাথে এই পর্বতে উঠবেন সেপ্টেম্বর মাসে। তারা ৮ দিন ধরে এই তহবিল সংগ্রহ করবেন। শার্পের এই দুঃসাহসিক কাজের যে দিকটি নিয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন তা হল উচ্চতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে কোণ দুর্ঘটনা ঘটানো অথবা উচ্চতা ভীতি কিংবা উচ্চতা জনিত যেকোন অসুস্থতা। উচ্চতা জনিত যে কোন অসুস্থতা খুব ভয়ংকর হতে পারে। তিনি বলেন, “আমি একে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। একেকজন এমন পরিস্থিতিতে একেকভাবে নিজেকে সামলে থাকে। আর এটি সম্পূর্ণ ভাগ্যের উপর নির্ভর করে”।
এই ভ্রমণের সকল ধরণের খরচ তিনি নিজের পকেট থেকে দিচ্ছেন, যা সবার ক্ষেত্রে একইরকম। সবাই নিজের খরচ নিজে দিচ্ছেন। অর্থাৎ যে অর্থ সংগ্রহ হবে তার সবটাই দাতব্য সংস্থায় যাবে। তিনি গত সপ্তাহে তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি পৃষ্ঠা খুলেছেন। অল্প কিছুদিনেই তিনি বেশ কিছু গ্রান্ড সংগ্রহ করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, “সকলের চমৎকার সমর্থন রয়েছে”।
শার্প নিজেকে সবার কাছে নায়ক না বানিয়ে খুব নম্রভাবে সবাইকে বুঝিয়ে চলেছেন কেন এই অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে। এই দলের সকল সদস্যরা আলাদাভাবে অর্থ সংগ্রহ করবেন এবং ভবিষ্যতে এই অর্থ একত্রিত করা হবে। এবং এই অর্থ প্রদান করা হবে ‘মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন অব নিউজিল্যান্ড’ কে।
তিনি বলেন, “আমরা একটি পদ্ধতিতে আছি যেখানে প্রাণপণ চেষ্টা করা হচ্ছে যেন সমাজে যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে তাদের সাহায্য করা যায়। এবং আমি মনে করে এতে সব দাতব্য সংস্থা যুক্ত আছে আর যুক্ত না থাকলেও সকল দাতব্য সংস্থার এমনটাই করা উচিত”।
প্রত্যেক বছর প্রতি পাঁচ জন নিউজিল্যান্ড বাসীর মধ্যে একজন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগে থাকেন। ‘মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন অব নিউজিল্যান্ড’ একটি নিবন্ধিত দাতব্য সংস্থা যা সমাজ থেকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সাহায্য করে এবং তাদের সাথে নানা ধরণের বৈষম্য তে তাদের পাশে দাঁড়ায়। তারা ইতিবাচক মানসিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্যের কল্যাণে নানা রকম প্রচার কার্য চালিয়ে থাকেন। তারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকেই নয় তার পরিবারের সদস্যদেরও সাহায্য করে থাকে।
তথ্যসূত্র-
(http://www.stuff.co.nz/timaru-herald/news/91686326/Geraldine-man-climbing-Mt-Kilimanjaro-to-raise-funds-for-mental-health)
রুবাইয়াত মুরসালিন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম