পুরুষদের তুলনায় নারীরা গুরুতর ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডারে বেশি ভোগেন। ১৫ শতাংশ বিবাহিত তরুণী, ১১ শতাংশ অবিবাহিত তরুণী এবং ৫ শতাংশ অবিবাহিত তরুণ গুরুতর ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডারে ভোগেন বলে জরিপে জানা গেছে।
তাছাড়া ৭৩ শতাংশ অবিবাহিত কিশোরী এবং ৬৬ শতাংশ অবিবাহিত কিশোর বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। এই তথ্যের জন্য কিশোরীরা বইয়ের ওপর নির্ভর করলেও কিশোরদের তথ্যসংগ্রহের মূল মাধ্যম হলো ইন্টারনেট।
দেশব্যাপী এই জরিপ পরিচালনা করে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (নিপোর্ট)। এতে টেকনিক্যাল সহায়তা প্রদান করে আইসিডিডিআরবির রিসার্চ ফর ডিসিশন মেকার্স (আরডিএম) প্রকল্প এবং ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনার ডাটা ফর ইমপ্যাক্ট (ডিফরআই)। জরিপে অর্থায়ন করেছে ইউএসএআইডি, যুক্তরাজ্যের দাতা সংস্থা এফসিডিও এবং বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে আনা ছিল এই জরিপের মূল উদ্দেশ্য। জরিপের মূল প্রতিবেদনে কিশোর-কিশোরীর গণমাধ্যম ব্যবহার, বিয়ে, ঋতুকালীন স্বাস্থ্যবিধি, জেন্ডার-সম্পর্কিত সামাজিক আচরণ, সহিংসতা, মানসিক স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও খাদ্যবৈচিত্র্য, এবং পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সংযোগ বিষয়ক ১২টি অধ্যায়ে জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে।
জরিপের তথ্যে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচটি পরিবারের একটিতে কমপক্ষে একজন কিশোর/কিশোরী (১৫-১৯ বছর বয়সী) আছে। কিশোর-কিশোরীর মধ্যে ৯৭ শতাংশ জীবনের কোনো না কোনো সময় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় (স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসা) অংশগ্রহণ করেছে।
দেশের ৯০ শতাংশ কিশোর-কিশোরী মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে। বিবাহিত কিশোরীদের প্রায় অর্ধেক ও অবিবাহিত কিশোরীর প্রায় এক-চতুর্থাংশের নিজস্ব মোবাইল ফোন আছে। কিশোরদের ৫০ শতাংশ এবং বিবাহিত এবং অবিবাহিত কিশোরীদের ২০ শতাংশ সপ্তাহে কমপক্ষে একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে।
জরিপে দেখা যায়, কিশোরীদের অধিকাংশই ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে এই পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত ছিল না। বিবাহিত ও অবিবাহিত কিশোরীদের প্রায় সকলেই (৯৮ শতাংশ) ঋতুকালীন সময়ে একবার ব্যবহারযোগ্য প্যাড বা সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে অনেকবার ব্যবহার করা যায় এমন উপাদান ব্যবহার করে। তবে, ঋতুকালীন স্বাস্থ্যকর আচরণের প্রবণতা এখনও বেশ কম, বিবাহিত কিশোরীদের মধ্যে ১৯ শতাংশ এবং অবিবাহিত কিশোরীদের মধ্যে ১২ শতাংশ মাত্র।
উল্লেখ্য, প্রতি চারজনের একজন কিশোরী (বিবাহিত এবং অবিবাহিত) ঋতুকালীন সময়ে কমপক্ষে একদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ রাখে।