খারাপ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া কেন কঠিন?

কেলি একজন ৫০ বছরের খুবই ব্যবসাসফল নারী। যদিও তিনি খুব কড়া, অভিজ্ঞ এবং বয়স্ক একজন নারী, তবুও তিনি বলছিলেন, সম্প্রতি তিনি কাজে হয়রানির স্বীকার হয়েছেন।তিনি এতটাই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন, যা কিছুতেই ভুলতে পারছিলেন না।
কেলির অভিজ্ঞতা এটাই বলে যে, কিছু খারাপ পরিস্থিতি থেকে আমরা সবসময় বের হয়ে আসতে পারি না, বিশেষত যখন যন্ত্রনাদানকারীরা আমাদের আত্মীয়, বন্ধু, কলিগ, ভালোবাসার মানুষ বা কর্মচারী হয়।
তিনি জানান, একজন নতুন সম্ভাবনাময় কর্মচারীর সাথে পিচ তৈরির কাজ করছিলেন তিনি, নতুন কর্মচারীটি পাশের ব্যক্তির সাথে তার সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করতে লাগলো যে, কেলিকে পোশাকের নিচে কেমন দেখায়। প্রথমে কেলি বিশ্বাস করতে পারছিলো না যে, সে এমন ধরনের কথা শুনছে। সে প্রতিবাদ করলো, সে এমন ধরনের কথা শুনতে রাজি নয়। তারপরও কি সে কাজ করতে চায় তার সাথে। কর্মচারীটি বললো, ‘অবশ্যই, তুমি এত সুন্দর মহিলা, তুমি একা কেন কাজ করছো? কেউ তোমাকে সাহায্য করছে না কেন? কেলি বুঝতে পারছিলো না সে কি উত্তর দিবে, তার তর্কে যেতে ইচ্ছা করছিলো না, ওই ব্যক্তির সাথে তার কোম্পানির অনেক টাকার লেনদেন হয়েছে। একই সময়ে তার ঐ ব্যক্তির সাথে কাজ করার ইচ্ছাও ছিলো না। তাই সে ঐ পিচের সাথে চলে গেলো। সে নিজেকে বললো, সে নিজেকে এই কারণে ঘৃণা করে এবং এরকম পরিস্থিতিতে কি করবে বুঝতে পারে না।
তার বস তার সাথে ছিল কিন্তু তারা এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেনি, বরং কর্মচারীটিকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানালো এবং কেলিকে কথোপকথন চালিয়ে যাবার জন্য ইশারা করলো।
কেলি তাদের ব্যবহারে খুবই আশ্চর্যান্বিত হলো, বস তার কোম্পানির কোনো কর্মচারীর হয়রানির কথা ভাবলেন না? তিনি একটা বিরাট অংকের টাকা রেখে চলে গেলেন, কিন্তু কিছু দিন আগেও তিনি বলছিলেন এ ধরনের ব্যবহার সহ্য করা উচিৎ না।
কেলির মতো এমন পরিস্থিতিতে যে কেউ পরতে পারে। তখন ব্রেইন ও শরীরকে অবশ মনে হয়। কোনো কিছুই ঠিকমতো কাজ করছে না বলে মনে হয় এবং এমন পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে যাবে  না মোকাবেলা করবে তাও বুঝতে পারে না।
অনেক নারী এবং পুরুষ এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ করতে ভয় ও লজ্জাবোধ করে, তারা ভাবে, পাছে সুন্দর সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে যায়।
কিন্তু সমাধান এটাই, কেউ যদি তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, তাকে সহ্য করার কোনো অর্থ থাকতে পারে না। অনেকের কাছে এই ধরনের পরিবেশ থেকে বের হয়ে আশা মানে তাদের আয়, ভালবাসা, নিরাপত্তা বা সাপোর্ট হারানো। সুতরাং এখানে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিকেও দোষ দেওয়া যায় না।
আমরা যত সৎ নারী পুরুশের পাশে দাঁড়াবো, তাঁদেরকে উদ্বুদ্ধ করব যেন তারা এমন হয়রানি না মেনে নেয়, ততই পৃথিবীতে হয়রানির পরিমান কমবে।
তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে জার্নালে প্রকাশিত F. Diane Barth L.C.S.W ভাষান্তর করেছেন সুস্মিতা বিশ্বাস।
লিংক: https://www.psychologytoday.com/blog/the-couch/201802/what-makes-it-so-hard-walk-away-bad-situation

Previous articleআত্মবিশ্বাসী হওয়ার ৫টি মূলমন্ত্র
Next articleবাংলাদেশে মানসিক রোগ নিয়ে নতুন সমীক্ষা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here