দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই কোনও না কোনওভাবে মানসিক চাপের জন্ম হয়। যে কোনও পরিস্থিতি বা অবস্থার কারণে আমাদের মধ্যে স্ট্রেস হতে পারে। মানুষের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা বা পরিস্থিতি, যা তার অনুভূতিতে পীড়া সৃষ্টি করে স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাকেই মানসিক চাপ বলে।
আমাদের শরীর অথবা মনের সামর্থ্যরে বাইরে কোনো চাহিদা বা অতিরিক্ত কাজের চাপ তা হতে পারে কিংবা জীবজন্তুর আক্রমণ, অনাকাক্সিক্ষত কোনো ঘটনা (যেমন- দুর্ঘটনা, প্রিয়জনের সঙ্গে মনোমালিন্য)। আমরা প্রত্যেকেই জীবনের কোনো না কোনো সময় মানসিক চাপ অনুভব করি।
মানসিক চাপের কারণ :
১. দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক রোগ যেমন- হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থাইটিস ইত্যাদি।
২. আবেগজনিত সমস্যা যেমন- বিষণ্ণতা, শোক, অপরাধবোধ, আত্মবিশ্বাসের অভাবে।
৩. ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে টানাপোড়েন, বন্ধুর অভাব, সহযোগিতা করার মানুষ না থাকা।
৪. জীবনে বড় কোনো পরিবর্তন যেমন- স্বামী/স্ত্রী, মা/বাবা এদের মাঝে কেউ মারা গেলে, চাকরিচ্যুত হলে, বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ বা বিবাহবিচ্ছেদ হলে, সন্তানের জন্মদান ও শিশু সন্তানের পরিচর্যার দায়িত্ব, নতুন কোনো শহর বা দেশে স্থানান্তর ইত্যাদি মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।
৫. পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে, মানসিক চাপের মাঝে থাকলে তা একই পরিবারের অন্যদের আক্রান্ত করতে পারে।
৬. দারিদ্র্য বা অর্থহানি।কর্মস্থলে অতিরিক্ত কাজের চাপ থাকলে অথবা কাজের পরিবেশ কর্মবান্ধব না হলে।
৭. বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার, বয়োবৃদ্ধিজনিত শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের এবংনিজের বিশ্বাস, মূল্যবোধ ইত্যাদির মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরির কারণ হতে পারে।
প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে এই চাপের কারণ যেমন ভিন্ন, তেমনি এই চাপ ভিন্নজনের ওপর ভিন্নরূপে প্রভাব বিস্তার করে। যার মূলে রয়েছে মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য, সামাজিক দক্ষতা, সামাজিক সমর্থন ইত্যাদির মাঝে পার্থক্য। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মানসিক চাপ। দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপে থাকা একজন ব্যক্তির মাঝে কগনিটিভ, শারীরিক, আবেগীয়, আচরণগত বিভিন্ন লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। যেমন-
চিন্তা ও চেতনায় পরিবর্তন/কগনিটিভ সিম্পটমস:
১. ভুলে যাওয়া
২. মনোযোগে সমস্যা
৩. বিচারবুদ্ধি কমে যাওয়া
৪. বমিভাব, মাথা ঝিমঝিম করা
৫. বুক ব্যথা, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, যৌনকাজে অনীহা তৈরি হওয়া
আবেগীয়:
১. বিষণ্ণ থাকা বা সব সময় অসুখী বোধ করা
২. উদ্বিগ্ন, অস্থির থাকা
৩. রেগে যাওয়া, বিরক্তবোধ করা
৪. ক্লান্ত বা বিপর্যস্ত বোধ করা
৫. একাকিত্বে ভোগা, বিচ্ছিন্ন থাকা
আচরণগত:
১. অতিরিক্ত অথবা কম খাদ্যগ্রহণ
২. অনেক বেশি অথবা অনেক কম ঘুমানো
৩. সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া
৪. দায়িত্বপালনে অবহেলা করা অথবা গড়িমসি করা
৫. মানসিক প্রশান্তির জন্য সিগারেট, এলকোহল বা বিভিন্ন ড্রাগস নেয়া।
চাপ সবসময় কাক্সিক্ষত; যা মানুষকে কাজে প্রেষণা জোগায়, মানুষের বৃদ্ধিতে, উৎপাদনশীলতায় ইতিবাচক প্রভাব রাখে। তাই চাপ কমানো বা চাপমুক্ত থাকার চিন্তা না করে চাপ ম্যানেজ করে চলতে হবে।
সুত্র: ইন্টারনেট।
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে