বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে খুমেকে বৈজ্ঞানিক সেমিনার

0
70

গত ১০ই সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে, মানসিক রোগ বিভাগ, খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উদ্যোগে এক প্রাণবন্ত ও অংশগ্রহণমূলক বৈজ্ঞানিক সেমিনার আয়োজন করা হয়। উক্ত সেমিনারে কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক এবং ডাক্তারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রথম বর্ষ থেকে পঞ্চম বর্ষ পর্যন্ত এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সেমিনারে আত্মহত্যা প্রতিরোধের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, “দিন দিন ছেলে মেয়েদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় সহসাই দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টা খুবই উদ্বেগের। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবো যেন আমাদের আশেপাশের মানুষদের সচেতন করতে পারি; তাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করতে পারি।”
বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস ২০২৩-এর প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “কর্মের মাধ্যমে আশার সঞ্চার”। দেশে ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ১০১ এবং ২০২২ সালে দেশে আত্মহত্যাকারী মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৩২। এরই ধারাবাহিকতায় এই বছর দেশের ১০৫টি জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ৩১ দশমিক ৩০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ১৩ শতাংশ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। রংপুরে বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ, ময়মনসিংহে আত্মহত্যা করেছে ১০ শতাংশ এবং রাজশাহীতে আত্মহত্যা করেছে ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং বরিশালে আত্মহত্যা করেছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ ছাড়া সিলেটে আত্মহত্যা করেছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। আত্মহত্যার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে নারী শিক্ষার্থীরা। ৩৬১ জন শিক্ষার্থীর ৫৯ দশমিক ৩০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী গত ৮ মাসে আত্মহত্যা করেছে। অন্যদিকে ৪০ দশমিক ৭০ শতাংশ পুরুষ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। শুধু নারী শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ বিবেচনায় দেখা যায় ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী অভিমান, প্রেমঘটিত কারণে ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ, মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, পারিবারিক বিবাদের কারণে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, ৫ দশমিক ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির কারণে এবং পড়াশোনার চাপ ও ব্যর্থতার কারণে ১২.৬০ শতাংশ আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যাকারীদের বয়সভিত্তিক বিবেচনায় দেখা যায় সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সি শিক্ষার্থীরা। ৬৭ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ছিল এই বয়সি।

উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম ফরিদুজ্জমান এবং বক্তা হিসেবে ছিলেন সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম সাইফুল ইসলাম রাজু ।

Previous articleবিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র‍্যালি
Next articleসাইকিয়াট্রি কনফারেন্স : ‘মনের যত্নে সবাই এক সাথে’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here