১ম এন আই এম এইচ দিবস উদযাপিত

R

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের ১৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এক অনাড়ম্বর অনুস্থানের মাধ্যমে উদযাপিত হলো গত ১৮এপ্রিল । ১৭ বছর আগে এই দিনে এই নামে প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে। যদিও এর শুরু হয়েছিলো আরও ১৩ বছর আগেই। ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিক ভাবে দিনটি উদযাপিত হয়। এ উপলক্ষ্যে ইন্সিটিউটের প্রাঙ্গন সকাল থেকেই অতিথিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন পরিচালকবৃন্দ, প্রাক্তন ও বর্তমান অধ্যাপকগণ ,প্রশিক্ষণার্থীগণ ও সকল চিকিৎসক, সেবিকা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল সোয়া ৯ টায় বেলুন ও ফেস্টুন উড়ানোর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় মনোরোগ চিকিৎসক অধ্যাপক হেদায়েতুল ইসলাম ও অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম। এরপর প্রতিষ্ঠানের কনফারেন্স হলে স্মৃতিচারণমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সঞ্চালনা করেন প্রতিষ্ঠানের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ হেলাল উদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিদের ফুল দিয়ে বরন করে নেয়া হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের উপ-পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ তারিকুল আলম। বক্তব্যে তিনি এন আই এম এইচ দিবস উদযাপন এর প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন এবং অনুষ্ঠান আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
অতিথিবৃন্দের মধ্যে স্মৃতিচারণ করেন অধ্যাপক আব্দুল ওহাব, অধ্যাপক ঝুনু শামসুন্নাহার, অধ্যাপক নিলুফার আক্তার জাহান, অধ্যাপক এম এ মুহিত, অধ্যাপক মোহাম্মদ খসরু পারভেজ চৌধুরী, অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক এম এস আই মল্লিক, ডাঃ মেখলা সরকার, ডাঃ মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক মহাদেব চন্দ্র মণ্ডল, ডাঃমোঃ দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক শাহিদা চৌধুরী, ডাঃ সুলতানা আলগিন, ডাঃ এম এ জালাল উদ্দিন ও মনবিদ জহির উদ্দিন।
প্রাক্তন পরিচালকদের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ফেরদৌস আরা চৌধুরী (প্রাক্তন পরিচালক আধ্যাপক এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজের সহধর্মিণী), অধ্যাপক এম এ হামিদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ ওয়াজিউল আলম চৌধুরী,অধ্যাপক মোঃ গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক মোঃ নাজমুল আহসান, অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম এবং অধ্যাপক হেদায়েতুল ইসলাম।
পরিচালকগণ এ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় তাঁদের সংগ্রাম মুখর কর্মকাণ্ডের বর্ণনা করেন ও তাঁদের শিক্ষকদের স্মৃতিচারণ করেন। অধ্যাপক মোহাম্মদ ওয়াজিউল আলম চৌধুরী বলেন, “ ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার ইতিহাসে একটি বিশেষ দিন। এ প্রতিষ্ঠান কারো দানে নয়, আমাদের পরিশ্রমের ফসল”। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের গুনে মানে আরও সমৃদ্ধি প্রত্যাশা করেন।
অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, “ অনেক রক্ত, ঘাম, মেধার ফলশ্রুতি এই প্রতিষ্ঠান।“ তিনি এর ক্রম উৎকর্ষতার দিকে ধাবিত হওয়ার প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম এই প্রতিষ্ঠান বর্তমান স্থানে স্থাপনে তার প্রচেষ্টা ও প্রশাসনিক বাঁধা বিপত্তির কথা বর্ণনা করেন এবং তার সহযোগীদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, “ কখনও একা কাজ করিনি, বাচ্চা সাইকিয়াট্রিস্টদের নিয়ে কাজ করেছি। কষ্টটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি, যারা ব্রিফ কেস ইন্সটিটিউট বলতো তাদের জবাব দেবার জন্য।“
অধ্যাপক হেদায়েতুল ইসলাম সেবার পাশাপাশি মান সম্পন্ন গবেষণার প্রতি জোর দেবার জন্য উপদেশ দেন।
এরপর বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক মোঃ ফারুক আলম প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট চালু করেন। সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক আলম এ প্রতিষ্ঠানের অর্জন ও নানা কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি এ হাসপাতালের Bed Occupancy হার ৯০% বলে উল্লেখ করেন। তাছাড়া ৭৫% রোগীদের জন্য ভাড়া বিহীন শয্যার ব্যাবস্থার কথা জানান। পাশাপাশি চালু থাকা বিভিন্ন শিক্ষা মূলক ( কোর্স) এবং গবেষণা কার্যক্রমের বর্ণনা দেন। কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।
উল্লেখ্য, এই দিবস উদযাপন উপলক্ষে সেদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে টিকিটের ব্যয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহন করে এবং অন্তঃ বিভাগে রোগীদের মিষ্টিমুখ করানো হয়।

Previous articleআর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে অটিজম বিষয়ে বৈজ্ঞানিক সেমিনার
Next articleনিজেকে ৫ শতাংশ ভালো রাখার ৬ টি উপায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here