শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য সমন্বিত কর্মসূচি প্রয়োজন

0
53

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পরিচালিত জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৮-১৯ বলছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ (২৮ মিলিয়নের বেশি) হালকা থেকে গুরুতর মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, ৭ থেকে ১৭ বছর বয়সী ১৪ শতাংশ শিশুর মানসিক অসুস্থতা রয়েছে। এর মাঝে ৯৫ শতাংশই কোনো ধরনের পরামর্শ বা চিকিৎসার আওতায় আসে না। অভিভাবকরা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে চিহ্নিতও করতে পারেন না। এ অবস্থা সমস্যাটিকে আরও প্রকট করে তোলে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা হিউম্যানিটি বিয়ন্ড ব্যারিয়ার্স-এর সহযোগিতায় আজ ২৯ শে জুন, শনিবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সভাকক্ষে গণমাধ্যম ও যোগাযোগ উন্নয়ন সংগঠন সমষ্টি আয়োজিত শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে অভিভাবকদের ভূমিকা শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, শিশুদের সুস্থ-স্বাভাবিক-পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ জরুরি হলেও এটি সব মহলে তেমন গুরুত্ব পচ্ছে না। এজন্য নীতি-নির্ধারণী উদ্যোগ ও কর্মসূচি দরকার। শহরের পাশাপাশি গ্রামের শিশুদের জন্য এরকম কর্মসূচি প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, অভিভাবকরা অনেক সময় শিশুদের ওপর অযথা চাপ প্রয়োগ করেন, তাদের প্রতিযোগিতার দৌড়ে নামিয়ে দেন। এরকম চর্চা শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং তাদের মানসিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তিনি বাবা-মাসহ অভিভাবকদের শিশুদের প্রতি সহনীয় আচরণ করার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন বলেন, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে সরকারিভাবে একটি জাতীয় রূপরেখা তৈরি করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত উদ্যোগ নেয়া হবে ।

অনুষ্ঠানের সভাপতি সাবেক সিনিয়র সচিব ও বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জনাব আবু আলম শহীদ খান বলেন, পারিবারিকভাবে যেমন এখানে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্কুল-কলেজ থেকেও শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের পর্যবেক্ষণ জরুরি।

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য জাতীয়ভাবে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো প্রতিকারের জন্য প্রয়োজনীয় সেবার আওতায় আনার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারেন মা-বাবাসহ অভিভাবকরা। এজন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে তাদের সচেতন, উদ্বুদ্ধ ও সাক্ষর করে তোলা জরুরি।

সেমিনারে বিষয় বিশেষজ্ঞ, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

Previous articleচাকরিতে উচ্চতর গ্রেড (২য় গ্রেড) প্রাপ্তি
Next articleসাইকিয়াট্রি বিভাগের জুলাই মাসের বৈকালিক আউটডোর সূচি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here