শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় প্রয়োজন পরিমাণমতো ঘুম

শারীরিক কিংবা মানসিক রোগ প্রতিরোধের জন্য পরিমাণমতো ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুম মানুষের ক্লান্তি দূর করে এবং পরবর্তী দিনের কর্মকান্ডের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করে। দৈনন্দিন কত ঘন্টা ঘুমালে শরীর-মন সুস্থ থাকবে এমন প্রশ্ন অনেকের মনে দেখা ‍দিতে পারে।
ক্লান্তি দূর করে পূনরায় কর্ম-উদ্দিপনা নিয়ে আসতে দৈনন্দিন কত ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন তা নিয়ে গবেষণা চালায় ‘ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন’ নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থা। প্রতি বছর এ নিয়ে তারা রিপোর্ট প্রকাশ করেন।
প্রতিষ্ঠানটির রিপোর্ট অনুযায়ী, সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় দৈনন্দিন সাত ঘন্টা ঘুমানো উত্তম। অতিরিক্ত কম কিংবা বেশি ঘুমালে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য সচরাচর ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানোর কথা বলে থাকেন। তবে নিয়মিত সাত ঘন্ট ঘুমালে মানুষ সুস্থ থাকে এবং আয়ু বৃদ্ধি পায় বলে জানান অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শান ইয়ংস্টেড। তিনি বলেন, সাত ঘন্টা যারা ঘুমান তাদের আয়ুষ্কাল বেশি হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ গড়ে ৭ ঘন্ট ১৩ মিনিট ঘুমিয়ে তারো বেশি তৃপ্ত থাকেন। সপ্তাহের অন্যান্য দিনে গড়ে ৬ ঘন্টা ৩১ মিনিট ঘুমালেও ছুটির দিনে তারা ৭ ঘন্টা ২২ মিনিট ঘুমিয়ে তৃপ্ত থাকেন।
২০১৫ সালে ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন’ (The Centers for Disease Control and Prevention) যে গবেষণা করে তাতে দেখা যায়, নিয়মিত ও পরিমাণতমো যারা ঘুমান তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্যদের চেয়ে বেশি।
এ গবেষণায় ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. ক্রিপক্যা ৬ বছর যাবত ১ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষের মতামত নেন। তিনি দেখতে পান, ৬ ঘন্টা ৫০ মিনিট থেকে ৭ ঘন্টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত যারা ঘুমান তাদের মৃত্যূর হার যারা বেশি ঘুমান তাদের চেয়ে কম।
তবে ড. মরগ্যান হলার বলেন, সংস্কৃতি এবং বংশগত কারণে ঘুমের সময় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভীন্ন হতে পারে। সুস্থ মানুষের জন্য সাত কিংবা আট ঘণ্টা না বরং ঘুমানোর পর উপলব্ধি করতে হবে যতঘন্টা তিনি ঘুমিয়েছেন তা তার জন্য পর্যাপ্ত কিনা।
ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের গবেষণায় দেখা যায়, ব্যক্তির ঘুমের সময় (ঘন্টায়) বয়সভেদে ভিন্ন। বিভিন্ন বয়সের মানুষের জন্য ঘুমের সময় নিয়ে তাদের যে প্রতিবেদন তাতে বলা হয়, শিশুজন্মের প্রথম দিন থেকে ৩ মাস পর্যন্ত দৈনন্দিন ১৪-১৭ ঘন্টা ঘুমানো উত্তম।
এছাড়া-
√ ৪ মাস থেকে ১১ মাস বয়সীদের জন্য ১২-১৫ ঘন্টা
√ ১ বছর থেকে ২ বছর বয়সীদের জন্য ১১-১৪ ঘন্টা
√ ৩ বছর থেকে ৫ বছর বয়সীদের জন্য ১১-১৩ ঘন্টা
√ ৬ বছর থেকে ১৩ বছর বয়সীদের জন্য ৯-১১ ঘন্টা
√ ১৪ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য ৮-১০ ঘন্টা
√ ১৮ বছর থেকে ২৫ বছর বয়সীদের জন্য ৭-৯ ঘন্টা
√ ২৬ বছর থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের জন্য ৭-৯ ঘন্টা
√ ৬৫ বা তার উর্ব্ধে বয়স যাদের তাদের জন্য ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উত্তম।
সূত্র: ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
 
ফারুক হোসেন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম

Previous articleআত্মহত্যার হার বেশি জাপানে!
Next articleআমি কিছুতেই মেডিকেলের পড়াশোনার সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারছি না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here