বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশমূলক বৈকল্য বলতে একটি শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক মানসিক ক্রিয়া তথা প্রজ্ঞানমূলক কর্মকান্ডকে বোঝায়। এটি একটি সমষ্টিগত অবস্থা যা প্রধানত একটি শিশু মায়ের গর্ভকালীন সময় হতে মস্তিস্কের বর্ধন বা বিকাশের সময় সৃষ্টি হয়ে থাকে। যা একটি শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক যেমনঃ চিন্তা, ভাবনায়, শেখায়, বিচার শক্তিতে, পরিকল্পনায়, সমস্যা সমাধানে, বিমূর্ত ভাবনায়, টাকা পয়সা লেনদেনে, সামাজিক দক্ষতায় ইত্যাদির সাথে ভাষা অর্জন এবং প্রয়োগে তাৎপর্যপূর্ন ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়।
বুদ্ধি এবং ভাষা বিকাশের ঘাটতিসমূহের মাত্রা অনুযায়ী বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশমূলক শিশুদের উপসর্গসমূহ নিম্নরূপঃ
নিজ মাতৃভাষার অন্তর্নিহিত জটিল ও অগ্রসর বিধিমালাসমূহ বিশেষ করে স্বাধীন ও আশ্রিত পদযুক্ত জটিল বাক্য, বহু অর্থ বিশিষ্ট বাক্য বুঝতে এবং প্রয়োগে সীমাবদ্ধতা।
বিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরে পঠিত ব্যাকরণগত সূত্র বুঝতে এবং প্রয়োগে সীমাবদ্ধতা।
অবিভাষাগত যোগ্যতা অর্জনে ঘাটতি অর্থাৎ ভাষার মাধ্যমে কোনকিছু বিশ্লেষন করা, রূপায়িত করা ও বর্ণনা করায় সীমাবদ্ধতা।
ধ্বনিগত সচেতনতা অর্জনে ঘাটতি অর্থাৎ ভাষার পঠনরূপের সাথে লিখিত রূপের মধ্যকার স্বরূপটি উন্মোচন করতে সীমাবদ্ধতা।
ভাষার প্রত্যেকটি শব্দই কোন না কোন বক্তব্যকে ধারন করে যার মধ্যে লুকিয়ে থাকে নানা অর্থগত ব্যঞ্জনা। মূলত শব্দ উচ্চরনের দ্বারাই যে কোন শিশু তার কাঙ্খিত বক্তব্যকে অন্যের কাছে তুলে ধরে এবং অন্যের কাছ থেকে ব্যক্ত কোন শব্দ হতে অর্থ খুজে বের করে। সামাজিকতার জন্য যোগাযোগ কর্মটি সাধিত করে। যা একটি বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশমূলক বৈকল্য শিশুদের মধ্যে ভাষিক বক্তব্য বলতে এবং বুঝতে তাৎপর্যপূর্ণভাবে সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়।
যদি আপনার শিশুর মধ্যে উপরিউক্ত বিষয়গুলো পরিলক্ষিত হয় তাহলে দেরী না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। চিকিৎসা ভাষাবিদের মাধ্যমে ভাষার সীমাবদ্ধতা নির্ণয় করতে হবে এবং স্পিচ ল্যাংগুয়েজ থেরাপী প্রদান করতে হবে। এর আগে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করাতে হবে এবং প্রয়োজনে আচরণগত অসুবিধার জন্য ঔষধ প্রদান করতে হবে।