সমস্যা:
আমি উৎসব ব্রহ্মা। ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অফ আইটি তে সিএসই নিয়ে ফাস্ট ইয়ারে আছি। আমি লাস্ট ৬ বছর ধরে প্যানিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত। আমি টানা ৬ বছর রিভট্রিল ০.৫ খেয়ে আছি। এখন অফ। ঢাকা মেডিক্যাল এ গিয়েছি এখন সাইকোথেরাপি নিচ্ছি। কিন্তু তখন তখন ভালো মনে হয় পরে কোন প্রবলেম হলেই আর এগুলো মনে থাকে না, আবার প্যানিক অ্যাটাক হয়।আমি কি করব কিছু বুঝতেছিনা। ডাক্তাররাও হেল্প করতে পারছে না। প্লীজ আনসারটা দিবেন।
পরামর্শ:
পরিচয় গোপন না করে মনের খবর.কম এর কাছে মন খুলে প্রশ্ন করেছ সেজন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ব্রম্মা। কারণ সামাজিক বাঁধার আবর্তে পড়ে মানসিক রোগীরা দিনের পর দিন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়।
তোমার প্রশ্ন পড়ে আমি বুঝতে পারলাম তুমি ৬ বৎসর আগে প্যানিক ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হয়েছ এবং সেই থেকে তুমি টানা ৬ বৎসর রিভোট্রিল নামক ঔষধ খেয়ে গেছ। তখন অন্য কোন ঔষধ বা সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা তোমাকে দেয়া হয়নি। আর ইদানীং তোমাকে সাইকোথেরাপি দেয়া হচ্ছে । অথচ তুমি কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছ না।
এমতাবস্থায় আমি তোমাকে সরাসরি একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞর কাছে অথবা বিশেষায়িত মানসিক রোগ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেব। প্যানিক ডিজঅর্ডার কোন দুরারোগ্য ব্যাধি নয়। এর অনেক প্রকার বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতি বিদ্যমান আছে। এখানে তার কিছু ধারণা আমি তোমাকে দিচ্ছি ।
গবেষণা মতে সমন্বিতভাবে ঔষধ এবং সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা চালালে তা এককভাবে ঔষধ খাওয়া কিংবা সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা নেওয়ার চাইতে ভাল ফল দেয়।
কোন নিষেধ না থাকলে স্পেসিফিক সিরোটনিন রিআপটেক ইনহিবিটর (এসএসআরআই) গ্রুপের ঔষধ হল এই রোগের প্রধান নির্দেশিত ঔষধ। অল্প মাত্রায় শুরু করে আস্তে আস্তে ডোজ বাড়াতে হয়। অন্যান্য বিকল্প ঔষধের মধ্যে আছে ট্রাইসাইক্লিক অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট (টিসি এ), লিথিয়াম, মক্লোবেমাইড এবং আরো অনেক। প্রয়োজন অনুযায়ী এসব ঔষধ বিভিন্ন কম্বিনেশনে ধাপে ধাপে ব্যবহার করা যেতে পারে।
রিভোট্রিল বা অন্যান্য বেনজোডায়াজেপিন জাতীয় ঔষধকে প্যানিক অ্যাটাক এর “রিজার্ভ” ঔষধ বলা যেতে পারে। যেহেতু উপরের ঔষধগুলো ভালভাবে কাজ করতে ৪-৬ সপ্তাহ সময় লাগে সেই গ্যাপ পিরিয়ডে এবং প্যানিক অ্যাটাক হলে তাৎখনিকভাবে এগুলো ব্যবহারের জন্য তুলে রাখা যেতে পারে।
বিহেভিয়র থেরাপি যেমন এক্সপোজার, রিলাক্সেশন, হাইপারভন্টিলেশন নিয়ন্ত্রণ, কগনিটিভ থেরাপি যেমন প্যানিক অ্যাটাক সম্বন্ধে সঠিকভাবে জানা বা চিন্তার ত্রুটিসমূহ সংশোধন করতে শেখা বা সাইকোডাইনামিক সাইকোথেরাপি ইত্যাদি সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা অনেক হেল্পফুল।
আর হ্যাঁ এসব চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তোমার বিশেষজ্ঞর কাছে যাওয়া দরকার।
এসব চিকিৎসা নেওয়ার পরও সুস্থ না হলে দেখতে হবে অন্য কোন শারীরিক বা মানসিক সমস্যার জন্য প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছে কিনা।
পরামর্শ দিয়েছেন,
প্রফেসর ডা. নিলুফার আক্তার জাহান
দৃষ্টি আকর্ষণ- মনেরখবর.কম এর প্রশ্ন-উত্তর বিভাগে, মানসিক স্বাস্থ্য, যৌন স্বাস্থ্য, মাদকাসক্তি সহ মন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আপনার কোনো জানার থাকলে বা প্রশ্ন থাকলে বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দরকার হলে question@www.monerkhabor.com এই ইমেলের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন।