বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৯ শতাংশ তরুণই বিষণ্ণতায় ভুগছে। একইসঙ্গে রয়েছে মানসিক চাপ ও উদ্বিগ্নতা। মানসিক চাপে রয়েছে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ, আর উদ্বিগ্নতায় ভুগছেন ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ। স্কুলপড়ুয়া শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে বিষণ্ণতাসহ মানসিক রোগ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার (১৫ মে) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ‘বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব জোরদারকরণ’ শীর্ষক এক সিম্পোজিয়ামে বক্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন। এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সহযোগিতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) শাখা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শহরের স্কুলগুলোতে বয়ঃসন্ধিকালের শিশুদের মাঝে ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ বিষণ্ণতায় ভুগছে। যার মধ্যে ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ মেয়ে ও ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ ছেলে। শিশুদের মধ্যে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বিভিন্ন রকম মানসিক রোগে ভুগছে। তাদের ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ ছেলে ও ১১ দশমিক ৫ শতাংশ মেয়েশিশু।
সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, তৃণমূল থেকে শুরু করে শহরের উচ্চবিত্ত, কেউই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার বাইরে না। তাই সবার অংশগ্রহণ এখানে জরুরি। দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
এনসিডিসির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির জন্য পাঁচটি নীতি- নির্দেশিকা, প্রোটোকলাইজড চিকিৎসা, রোগীর যত্ন কেন্দ্র, নিয়মিত ওষুধ এবং তথ্য সংরক্ষণ অনুসরণ করা উচিত। দেশে এ নীতিগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করা না হলে, মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি হবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইএমএইচ) পরিচালক অধ্যাপক অভ্র দাস ভৌমিক, হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান থেকে দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলায় বহুমুখী অংশগ্রহণ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব এবং একটি গাইডলাইন তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ এবং নীতিনির্ধারকরা। এছাড়া বিশাল সংখ্যক রোগীর সেবাদানে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও মনোবিদদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার পরামর্শও দেন তারা।