২০২১ সালের মধ্যে নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং আত্মহত্যা ঠেকাতে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। মানসিক রোগ চিহ্নিতকরণ, সেবা প্রদান, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানসিক রোগ সম্পর্কে সমাজে বিদ্যমান কুসংস্থার দূর করতে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো অপারেশন এন্ড ডেভেলাপমেন্ট (Organisation for Economic Co-operation and Development বা OECD) এর মতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় মানসিক রোগীর সংখ্যা এবং মানসিক রোগের কারণে আত্মহত্যা করে এমন মানুষের সংখ্যা অধিক। তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার হার আরও বেশি।
আত্মহত্যার হার কমিয়ে আনতে দক্ষিণ কোরিয়া ২০০৯ সালে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে সফল হয়েছেন অনেকাংশেই। ২০১৩ সালে এ মেয়াদ শেষ হয়। এছাড়া ২০১১ সালে আত্মহত্যা প্রতিরোধ এবং সচেতনতা তৈরি করতে বিধান তৈরি করে। তবে ২০১২ সাল থেকে আত্মহত্যার হার ক্রমে বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন সরকার।
দেশটির স্বাস্থ্যকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীন ‘মনোরোগ নির্ণয় কেন্দ্র’র তথ্য অনুযায়ী, গত চার বছরে ১২১ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে ৮৮ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ হতাশার কারণে কিংবা অ্যালকোহল সেবন তথা মাদকাসক্ত হয়ে মারা গেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মানসিক রোগের চিকিৎসার প্রতি অনীহা আর মাদকাসক্তের কারণে দেশটিতে আত্মহত্যা করার প্রবণতা বাড়ছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আত্মহত্যা করেছে এমন রোগীদের ৯০ শতাংশের মধ্যে মানসিক রোগের উপসর্গ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১৫ শতাংশ রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা বাড়লেও ২৫ শতাংশ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যায় বলে উল্লেখ করা হয়। অধিকাংশ রোগী মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে কিংবা মনোরোগের ডাক্তারের কাছে না গিয়ে অন্যান্য ডাক্তারের কাছে যান পরামর্শ ও সেবা নিতে।
তাই পাঁচ বছর মেয়াদী এ পরিকল্পনার লক্ষ্য হবে মানসিক রোগ প্রতিরোধ এবং রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।
সূত্র: দ্যা কোরিয়া হ্য্যারল্ড এবং নিউইয়র্ক টাইমস
ফারুক হোসেন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম