এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ জাপানে প্রতিদিন অন্তত ৭০ জন মানুষ আত্মহত্যা করে যার অধিকাংশই পুরুষ। গত এক বছরে দেশটিতে ২৫ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছে যার সংখ্যা উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বলে বিবিসির খবরে বলা হয় ।
অতিমাত্রায় আত্মহত্যার কারণ হিসেবে বিচ্ছিন্নতা (Isolation) দায়ী করছেন মনোরোগবিদরা।
জাপানের টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ওয়াতারু নিশিদা বলেন, বিচ্ছিন্নতা ও নির্জনতার কারণে মানুষ হতাশায় নিমগ্ন হয় এবং এক পর্যায়ে আত্মহত্যা করে। ব্যক্তি একাকীত্ব অনুভব করলে কিংবা হতাশ হলে কারো সাথে শেয়ার করবে এমন লোক খুজে পান না। আবার কাজের দৈনন্দিন চাপ সামলাতে না পেরে অনেকেই হীনমন্যতায় ভোগেন।
বৃদ্ধ বয়সে সন্তানরা বাবা-মা’র যত্ন না নেয়ার কারণে এ হার বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রতিদিন খবর পাওয়া যায়, বৃদ্ধরা একাকীত্ব অনুভব করে আত্মহত্যা করছেন। সন্তানেরা বৃদ্ধ বাবা-মা’র খোঁজ খবর নিলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
শুধু বৃদ্ধরাই নয় অর্থিক সংকটে পড়লে ২০ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ব্যক্তিরাও আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। দেশটিতে চাকুরিতে যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও চাকুরির স্থায়িত্বজনিত কারণে ৪০ শতাংশ তরুণ নিজ অবস্থানে সন্তুষ্ট নয়।
তবে দেশটির দাতব্য সংস্থার কর্মকর্তা কেন যোসেফ বলেন, আর্থিক সংকটে পড়লে কোনো উপায় না পেয়ে তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেন কারণ জাপানে ইন্সুরেন্স ব্যবস্থা অনেক শিথিল হওয়ায় আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির পরিবার মোটা অঙ্কের অর্থ পান। এ কারণে স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেন এমন সংখ্যাও জাপানে কম নয়।
তিনি আরো বলেন, আত্মহত্যা করলে কোনো পাপ হয় না’ এমন ধারণা লালন করার ফলে অনেকেই স্বেচ্ছায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।
তবে আত্মহত্যার এ হার আরো বেশি বলে মনে করা হয়। কারণ অনেক সময় আত্মহত্যার খবর প্রকাশ করা হয় না কিংবা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে না।
সূত্র: বিবিসি নিউজ
ফারুক হোসেন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম