আত্মহত্যার সংবেদনশীল বিষয়কে চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যে উপস্থাপন করার সময় অধিকতর দায়িত্বশীল হওয়ার বার্তা পৌঁছে দিতে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক একটি বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাজে আত্মহত্যার হার বাড়ার প্রেক্ষাপটে, চিত্রনাট্যে এর ইতিবাচক উপস্থাপন যে কীভাবে প্রভাব ফেলে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করা হয় এই অনুষ্ঠানের মাধ্যামে। এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৯ এপ্রিল, বুধবার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এই কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল—বাংলাদেশের মঞ্চ ও পর্দায় কর্মরত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীদের আত্মহত্যা প্রতিরোধে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। যাতে তারা তাদের গল্প ও চিত্রনাট্যে আত্মহত্যার মতো সংবেদনশীল বিষয় উপস্থাপন করার সময় আরো মানবিক, বিজ্ঞানসম্মত ও দায়িত্বশীল থাকেন। এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন—জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, ডা. মুনতাসীর মারুফ, অধ্যাপক ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব, লেখক ও সাংবাদিক সাইফুল্লাহ রিয়াদ আরও উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বিনোদন অঙ্গনের শিল্পীরা।
এই কর্মশালার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা আত্মহত্যা বিষয়ক মনস্তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক প্রভাব এবং প্রতিরোধমূলক কৌশল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। চিত্রনাট্যে আত্মহত্যার দায়িত্বশীল উপস্থাপন কীভাবে একটি জীবনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব গড়ে তোলে—সেই উপলব্ধি সৃষ্টি হয়েছে। এই উদ্যোগ চলচ্চিত্র ও নাটকে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে।
ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মশালায় বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই কর্মশালা আত্মহত্যা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বাংলাদেশে আত্মহত্যার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, সেখানে গণমাধ্যম ও বিনোদন জগতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আত্মহত্যাকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আত্মহত্যাকে কেউ ইতিবাচক হিসাবে গ্রহণ না করে সেইদিকে খেয়াল রাখতে হবে চিত্রনাট্য নির্মাণের সময়।
চিত্রনাট্যের মাধ্যমে জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বশীলতা শিল্পীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এই ধরনের উদ্যোগ সময়োপযোগী। ভবিষ্যতে আরও ধারাবাহিক কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতনতার এই আলো আরও বিস্তৃত করা প্রয়োজন।