সমস্যা :
সমস্যাটা আমার ছেলের। বয়স ৯ বছর। সে প্রচুর মিথ্যা কথা বলে। প্রায় এক বছর আগে থেকেই তার সমস্যা শুরু হয়েছে। কিন্তু তখন আমরা বিষয়টিকে তার ছেলেমানুষী ভেবেছি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তার এই মিথ্যা বলার জন্য আমাদেরকে ঘরে-বাইরে সব জায়গায় বিপদে পড়তে হয়। সে পড়াশুনাও ঠিকমত করে না। স্কুলের টিচারদের সাথেও অনেক মিথ্যা কথা বলে। এজন্য অনেকবার শাস্তি পেয়েছে, কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। এখন তাকে নিয়ে আমাদের কি করা উচিৎ?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
পরামর্শ :
আপনার ছেলেটির যে সমস্যা মিথ্যা কথা বলা সেটি এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই অভ্যাসটি গড়ে উঠেছে পিতা-মাতার তার দিকে সঠিকভাবে খেয়াল না রাখার জন্য। তার ছোট ছোট ভুলকে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে যা এখন এত বড় হয়েছে যে আপনাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তার এই মিথ্যা বলার সাথে সাথে অন্যান্য আচরণের সমস্যাও হচ্ছে যাকে আমরা বলি খুবই বিব্রতকর পীড়াদায়ক আচরণ। এই আচরণ একটা ব্যাধি হয়ে গেছে। এই ব্যাধিতে রোগীকে যথাযথ বিশ্লেষণ করতে হবে এবং অন্যান্য আচরণের সমস্যা আছে কিনা যেমন- চুরি করা বা না বলে কিছু নিয়ে ফেলা কিংবা তর্কাতর্কি করা, মারামারি করা ইত্যাদি বিব্রতকর আচরণ আছে কিনা তা লক্ষ্য করতে হবে। লেখাপড়াতে অনাগ্রহের সাথে সাথে স্কুলে না যাওয়া বা স্কুল থেকে পালানোর সমস্যা আছে কিনা সেটাও দেখতে হবে। তার হয়তো আচরণগত সমস্যাই আছে যেটাকে আমরা কন্ডাক্ট ডিজঅর্ডার বলে থাকি। আর এ বয়সে আপনার সন্তানের যে বর্ণনা দিলেন তাতে তার কন্ডাক্ট ডিজঅর্ডার হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এজন্য তার আচরণগত চিকিৎসা লাগবে। এই চিকিৎসায় তাকে কেন্দ্র করে একটা চিকিৎসা পরিকল্পনা দাঁড় করাতে হবে, আপনাদেরকে কেন্দ্র করে একটা চিকিৎসা পরিকল্পনা দাঁড় করাতে হবে। পাশাপাশি স্কুলের সহায়তা অর্থাৎ শিক্ষকদের সহায়তাও প্রয়োজন। সব মিলিয়ে যদি আচরণগত চিকিৎসা এবং প্যারেন্টিং কাউন্সেলিং দেয়া যায় তবে আশা করা যায় উপকার পাওয়া যাবে।
পরামর্শ দিচ্ছেন,
প্রফেসর ডা. এম এস আই মল্লিক
দৃষ্টি আকর্ষণ- মনেরখবর.কম এর প্রশ্ন-উত্তর বিভাগে, মানসিক স্বাস্থ্য, যৌন স্বাস্থ্য, মাদকাসক্তি সহ মন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আপনার কোনো জানার থাকলে বা প্রশ্ন থাকলে বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দরকার হলে question@www.monerkhabor.com এই ইমেলের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন।