মানসিক রোগ নিয়ে ধারণা, ভুল ধারণা এবং বিবিধ-পর্ব ৫

দৃশ্যপট- ১.  বছর দেড়েক হয়ে গেল- খাওয়ার একটু পড়েই অয়ন উগরিয়ে দিচ্ছে যা খেয়েছে তাই, কখনো আধা-হজম হওয়া খাবার। স্বাভাবিক ভাবেই পেটের গোলমাল, কৃমির সমস্যা এসবের অনেক চিকিৎসা ও বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। শেষে অয়নের চিকিৎসক জানালেন এক বিশেষ রোগের নাম-Rumination Disorder -যা একটা মানসিক রোগ। অয়নের মা প্রতিবাদ না করলেও মন থেকে মেনে নিতে পারলেন না। কারণ, ছেলের আচার-আচরণ, কথাবার্তায় কোন পাগলামির লক্ষণ তিনি দেখেননি। মানসিক রোগ হতে হলে অন্তত এটুকু তো থাকতে হবে।
দৃশ্যপট- ২. হাসপাতালের ক্যান্টিনে সহকর্মী নিয়ে নাস্তা করতে গিয়েছে ডাঃ রাজীব। সদ্য পাশ করেছে এবং প্রথমবারেই স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হতে পেরে বেশ ফুর্তিতেই কাটছে তার। হঠাৎ-ই দেখা এক সিনিয়র ভাইয়ের সাথে। জানতে চাইলেন রাজীবের বিষয় কি? যখনি সে বলল মনোরোগ – উপস্থিত সবার মাঝে একটা মৃদু হাসি। বড়ভাই পিঠ চাপড়ে বললেন – খুবই ভাল সাবজেক্ট, তবে পাগল ঠিক করতে গিয়ে আবার নিজে পাগল হয়ে যেওনা।
এরকম আরও অসংখ্য উদাহরণ খুঁজলেই পাওয়া যাবে – যার সারাংশ একটাই।
মনোরোগ, মানসিক রোগী, মনোরোগ চিকিৎসক – এর সব কিছুর শুরুতেই আমাদের মনে ভেসে উঠে – পাগল, পাগলামি, অসংলগ্ন আচরণ – এরকমই আরও কিছু শব্দ।
অনেক সভা-সেমিনার, প্রচারণা, লেখালেখি, দিবস পালন -প্রভৃতির ফলে মানসিক রোগ সম্পর্কে ধীরে ধীরে কিছুটা সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। তবু মনের গহীনে এখনো পরিবর্তন আসেনি -সেটা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে অনেক চিকিৎসকের মধ্যেও।
অনেকে মানসিক রোগ মানে শুধুই পাগলামি নয়, আরও অনেক কিছু -একথা জানেন। কিন্তু সেই অনেক কিছুটা কি -তা জানেন না। বড়জোর -বিষণ্ণতা, অসংলগ্ন আচরণ, দুশ্চিন্তা – এই পর্যন্তই। সঠিক ভাবে না জানার ফলে, অনেকে মানসিক রোগে কষ্ট পেয়েই চলেছেন, আবার কেউ চিকিৎসা করতে গিয়ে আশেপাশের লোকজনের সরব-নীরব উপহাসের বিষয়বস্তু হচ্ছেন।
তাই, চলুন মানসিক রোগ সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক ধারণা নিই।
WHO কর্তৃক প্রণীত International Classification of Disease সংক্ষেপে ICD-10-এর পঞ্চম অধ্যায় Mental and Behavioral Disorder (F00-F99) -এ এবং American Psychiatric Association কর্তৃক প্রণীত Diagnostic & Statistical Manual of Mental Disorder এর 5th edition সংক্ষেপে DSM-5 -এ মানসিক রোগ সম্পর্কে উল্লেখ আছে। তবে এখানে সবকিছুই DSM-5 অনুসারে বলার চেষ্টা করা হয়েছে।
মানসিক রোগ কি:
সাধারণ ভাবে আমরা বুঝি, শরীরের মতো মনের কোন অসুস্থতা। তবে, DSM-5 এ যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে  তার মোদ্দা কথা, মানসিক রোগ হচ্ছে –
– এক বা একাধিক উপসর্গের সমষ্টি,
– একজন ব্যক্তির বুদ্ধিবৃত্তি বা আবেগ নিয়ন্ত্রণ অথবা আচরণ – এর উল্লেখযোগ্য অসুবিধাই যার বৈশিষ্ট্য,
– মূলতঃ ঐ ব্যক্তির মানসিক প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত মনোজাগতিক, শারীরবৃত্তিক অথবা সামগ্রিকভাবে বেড়ে উঠার বিভিন্ন পর্যায়ের কোথাও – যে কোন অস্বাভাবিকতার বহিঃপ্রকাশ,
– যার কারণে একজন ব্যক্তি তাঁর সামাজিক, পেশাগত বা জীবনের অন্য কোন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অসুবিধা ভোগ করেন বা প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে অসমর্থ হন।
উল্লেখ্য, একজন ব্যক্তির আপাতদৃষ্টিতে অসংলগ্ন বা অস্বাভাবিক কোন আচরণ বা চিন্তা বা প্রতিক্রিয়া -যদি ঐ ব্যক্তির সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক প্রভৃতি দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যায়, তবে তা মানসিক রোগ বলা যাবে না।
মানসিক রোগের ব্যাপ্তিঃ
মানসিক রোগ অনেক ধরণেরই হতে পারে। আলোচনা এবং বোঝার সুবিধার্থে উদাহরণগুলো একটু বিন্যস্ত করে (এবং বাংলায় যতটুকু সম্ভব ভাবানুবাদ করে) উল্লেখ করা যাক –
১) স্নায়ু-বিকাশ জনিত সমস্যাবলী (Neurodevelopmental Disorders):
– বড় হয়ে উঠার সময়ে বুদ্ধির অভাব, যেমন- সমস্যা বুঝতে না পারা, এর পিছনের কারণ ধরতে না পারা, পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়া। পারিপার্শ্বিকতার সাথে খাপ খাওয়ানোর সমস্যা, যেমন- সামাজিক মেলামেশা বা বন্ধুদের সাথে মিশতে না পারা। যথাযথ ভাবে ভাষা ব্যবহার (মৌখিক, লিখিত, ইঙ্গিত বা অন্য কোন ভাবে) করতে না পারা। তোতলামি; অটিজম; কাজে–কর্মে বা পড়ালেখায় মনোযোগহীনতা, বার বার ছোটখাটো ভুল করতে থাকা, অবাধ্যতা, দৈনন্দিন কাজ ভুলে যাওয়া, অতিরিক্ত চঞ্চলতা, বাচালতা, অস্থিরতা; পড়তে না পারা, পড়া বুঝতে না পারা, গণিত না পারা, লিখে কোন ব্যাপার সঠিক ভাবে বুঝাতে না পারা; একই ধরণের অঙ্গ-সঞ্চালন বা একই শব্দ বার বার করা।
২) সিজোফ্রেনিয়া ও অন্যান্য মানসিক বিকৃতি জনিত সমস্যাবলী (Schizophrenia & other psychotic Disorders):
– সাধারণ ভাবে বলতে গেলে অহেতুক সন্দেহ করা, অবাস্তব বা গায়েবী আওয়াজ শোনা বা কোন কিছু দেখা বা গন্ধ পাওয়া-এ জাতীয় লক্ষণ দেখা যায়।  তবে বিষয়টি একটু জটিল, বিস্তারিত অন্য কোন সময় বলা যাবে।
৩) মনের ভাব (মেজাজ) সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Bipolar & related Disorders):
– নদীর জোয়ার-ভাঁটার মতোই মনের ভাব পরিবর্তন; অর্থাৎ, কিছুদিন অস্বাভাবিক উচ্ছলতা, চঞ্চলতা, কর্মোদ্যমতা, রাগারাগি, ভাংচুর করা আবার কিছুদিন প্রচণ্ড মন খারাপ, উদ্যমহীনতা, ঝিম মেরে বসে থাকা।
৪) বিষণ্ণতা (Depressive Disorders):
– দীর্ঘমেয়াদী এবং অস্বাভাবিক মন খারাপ, আত্মহত্যার চিন্তা বা চেষ্টা, উদ্যমহীনতা প্রভৃতি।
৫)  উদ্বিগ্নতা জনিত সমস্যাবলী (Anxiety Disorders):
-কারো কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার এবং সেকারণে ভবিষ্যৎ অসুবিধার কথা ভেবে অহেতুক ও অস্বাভাবিক দুশ্চিন্তা;  কোন বিশেষ স্থানে বা পরিবেশে কথা বের না হওয়া; কোনও নির্দিষ্ট বিষয় (যেমন- কোন বিশেষ প্রাণী, উচ্চতা, সূঁচ, ইনেজকশন, রক্তপাত, লিফট-এরকম হরেক রকমের ব্যাপার) নিয়ে অহেতুক, অতিরিক্ত এবং অস্বাভাবিক ভয়; সামাজিক অনুষ্ঠান বা মেলামেশা নিয়ে দুশ্চিন্তা বা ভয়; অকারণে বা সামান্য কারণে প্রচণ্ড রকমের আতঙ্কগ্রস্ত হওয়া, বুক ধড়ফড়, ঘাম দেওয়া, দম আটকে আসার অনুভূতি, মৃত্যুভয়; মানুষের ভিড়ে বা খোলা জায়গায় মানুষের সাথে চলতে-ফিরতে ভয় বা দুশ্চিন্তা হওয়া;  দৈনন্দিন সকল কাজে সবসময় দুশ্চিন্তা করা।
৬) শুচিবাই ও এ-সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Obsessive-compulsive & related Disorders):
– একই চিন্তা, কল্পনা বা ছবি বারবার মনের মধ্যে আসতে থাকা-কোন ভাবেই যা থামানো যায়না। একই কাজ বারবার করতে থাকা – যেমন বারবার হাত ধোয়া, বার বার গুনতে থাকা; শারীরিক সৌন্দর্য বা গঠন নিয়ে ভ্রান্ত বিশ্বাস পোষণ করা; অপ্রয়োজনীয় জিনিষ অস্বাভাবিক ভাবে জমানো; বিনা কারণেই নিজের মাথার চুল ছিঁড়া-ফলে মাথায় টাক পড়ে যায়;  ঠোঁট, নখ বা অন্য কোন স্থানের চামড়া কামড়ান বা চুলকানো বা অন্য কোন ভাবে বার বার নষ্ট করা।
৭) আঘাত ও মানসিক চাপ সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Trauma & stressor related Disorders):
– ভয়ঙ্কর কোন অভিজ্ঞতার পর সেটা বারবার মনে আসা, আতঙ্কিত হয়ে পড়া, অসহায় বোধ করা, অস্বাভাবিক আচরণ করা; কোন একটা জায়গায়, যেমন – নতুন কর্মস্থল বা বাসস্থানে খাপ খাওয়ানোর অসুবিধা।
৮) ডিসোসিয়েটিভ সমস্যাবলী (Dissociative Disorders):
– বিষয়টি স্বল্প পরিসরে বোঝান কঠিন। সংক্ষেপে বলতে গেলে- কোন ব্যক্তির নিজেকে একেক সময়  আলাদা আলাদা ব্যক্তি হিসেবে দাবি করা -এরকম আরও কিছু সমস্যা।
৯) শারীরিক উপসর্গ-প্রধান ও এ-সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Somatic symptom & related Disorders):
– মানসিক রোগে শারীরিক সমস্যা, সারাদিন রোগ নিয়েই চিন্তা করা, ইচ্ছাকৃত ভাবে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া সহ বিভিন্ন রকম উপসর্গ দেখানোর চেষ্টা  প্রভৃতি।
১০) খাওয়া-দাওয়া সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Feeding & eating Disorders):   
– বিভিন্ন রকম অখাদ্য খাওয়া, মুটিয়ে যাওয়ার ভয়ে কঠোর খাদ্য নিয়ন্ত্রন বা খাওয়ার পর নিজ উদ্যোগে বমি করা, অল্প অল্প করে  স্বল্প-বিরতিতে বারবার খেতে থাকা।
১১) মল-মূত্র ত্যাগ সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Elimination Disorders):
– বিছানা বা কাপড়ে বারবার প্রস্রাব করা,  স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা ব্যতিরেকে মল ত্যাগ করা।
১২) ঘুম/নিদ্রা সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Sleep-wake Disorders):
– নিদ্রাহীনতা, অতিরিক্ত ঘুম, হঠাৎ হঠাৎ নিজের অজান্তে ঘুমিয়ে পড়া, নাক ডাকা, ঘুমের মধ্যে “বোবা”-য় ধরা, ঘুমের ছন্দপতন, ঘুমের মধ্যে হাঁটা, প্রচণ্ড ভয় পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠা, বারবার দুঃস্বপ্ন দেখা।
১৩) যৌনতা বিষয়ক সমস্যাবলী (Sexual Dysfunctions):
-দ্রুত বীর্যপাত, অনেক দেরীতে বীর্যপাত, লিঙ্গের উত্থান বিষয়ক সমস্যা, যৌনমিলনে আগ্রহ কমে যাওয়া প্রভৃতি।
১৪) লিঙ্গ-পরিচয় সম্পর্কিত অসন্তুষ্টি (Gender Dysphoria):
– নিজের শারীরিক ভাবে নির্দিষ্ট লিঙ্গ পরিচয়ে অসন্তুষ্টি, যেমন – একজন পুরুষের মনেপ্রাণে নিজেকে মেয়ে হিসেবে চিন্তা করা, মেয়ের মত আচরণ করা প্রভৃতি। একইভাবে একজন মেয়েরও এই সমস্যা হতে পারে।
১৫) আবেগ ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Disruptive, impulse-control & conduct Disorders):
– বদরাগী, সবসময় বিরক্তি-ভাব, অতিরিক্ত ও অহেতুক তর্ক করা, আদেশ না মানার প্রবণতা, প্রতিহিংসা পরায়ণ মনোভাব, মানুষ বা নিরীহ প্রাণীর প্রতি আগ্রাসী -নির্দয় মনোভাব; আগুন বা অন্য ভাবে সম্পত্তি ধ্বংস করা; ধূর্ত আচরণ; কারো বাড়ি বা দোকান থেকে চুরি করা, চুরি না করে থাকতে না পারা; স্কুল পালানো, বাড়ি পালানো।
১৬) নেশা ও আসক্তি সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Substance related & addictive Disorders):
-যেকোনো মাদকদ্রব্যের নেশা; ইন্টারনেট-মোবাইল-টিভি-পর্ণ মুভি আসক্তি; ঘুমের বড়িতে আসক্তি; জুয়ার নেশা।
১৭) বুদ্ধিবৃত্তিক  সমস্যাবলী (Neurocognitive Disorders): (সাধারণত বয়স্কদের সমস্যা)
– মনোযোগহীনতা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, ভুলে যাওয়া, আলঝেইমার রোগ।
১৮) ব্যক্তিত্ব সম্পর্কিত সমস্যাবলী (Personality Disorders):
-কোন সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই অন্যদের প্রতি সন্দেহ-প্রবণ স্বভাব; সামাজিক পরিবেশ থেকে দূরে থাকার স্বভাব; অযৌক্তিক- অবৈজ্ঞানিক-জাদুকরী চিন্তাভাবনা প্রধান স্বভাব; অসামাজিক-অনৈতিক কার্যকলাপে আগ্রহী স্বভাব; প্রায় সকল ব্যক্তির সাথে স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখতে না পারা; অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ স্বভাব; ভীষণ আত্ম-অহংকারী স্বভাব; সমালোচনা বা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয়ে সামাজিক পরিবেশ এড়িয়ে চলা স্বভাব; জীবনের সবক্ষেত্রে পরনির্ভরশীল স্বভাব; সবকিছুতেই সেরা, নিখুঁত হতে চাওয়া অর্থাৎ খুঁতখুঁতে স্বভাব।
১৯) যৌন-বিকৃতি জনিত সমস্যাবলী (Paraphilic Disorders):
-যৌন উত্তেজনা বা পুলকের জন্য আত্মনিগ্রহ করা; অপরকে অত্যাচার করা; উদ্দেশ্যমূলক ভাবে শরীর প্রদর্শন করা; কারো অজ্ঞাতসারে বা অসম্মতিতে শরীরে স্পর্শ করা; অপ্রাপ্তবয়স্কদের ব্যবহার করা; বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পড়া বা চিন্তা করা।
এর বাইরেও বেশ কিছু মানসিক রোগ আছে।
তবে মনে রাখতে হবে, উপরে যে সকল উপসর্গ বা সমস্যার কথা বলা হয়েছে; তার অনেক কিছুই একজন সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রেও থাকতে পারে। পার্থক্য হচ্ছে –  রোগ বলতে গেলে এসবের মাত্রা বা তীব্রতা এমন হতে হবে যে, তা একজন মানুষের জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে সমস্যা বা অসুবিধা তৈরি করবে এবং সুনির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা হল, এখানে কিছু উদাহরণ দেওয়া হয়েছে মাত্র, কিন্তু কোন রোগ নির্ণয় করতে হলে আরও অনেক কিছুই বিবেচনায় আনতে হয় – যে কাজটি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের  পক্ষেই করা সম্ভব।
এ লেখার উদ্দেশ্য – মানসিক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা, প্রাথমিক কিছু ধারণা দেয়া। আতঙ্ক তৈরি করা বা সব সমস্যার মূলেই মানসিক রোগ একথা প্রচার করা নয়।
মানসিক রোগের ব্যাপ্তি সম্পর্কে জানুন, ধারণা রাখুন। কেউ মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে তা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলুন। প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন – সুস্থ থাকুন, আনন্দে জীবন কাটান। চিকিৎসাবিদ্যার অন্য সব শাখার মতো মনোরোগ বিদ্যারও এটাই প্রধান লক্ষ্য।


প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।

Previous articleমানসিক রোগে শারীরিক উপসর্গ (কিস্তি-৪)
Next articleনারীর যৌন রোগ : অর্গাজমিক ডিসওর্ডার
ডা. পঞ্চানন আচার্য্য। স্থায়ী ঠিকানা চট্টগ্রাম। তবে, কলেজ শিক্ষক মায়ের চাকুরিসূত্রে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কেটেছে শৈশব। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবং উচ্চ-মাধ্যমিক চট্টগ্রাম কলেজ থেকে। সিলেট এম. এ. জি. ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাসের পর সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। মেডিক্যালে পড়ার সময় থেকেই মনোরোগ নিয়ে পড়ার প্রতি আগ্রহ। তাই, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্ধারিত সময়ের চাকুরি শেষে ভর্তি হন মনোরোগবিদ্যায় এম.ডি(রেসিডেন্সি) কোর্সে। বর্তমানে তিনি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। বংশপরম্পরায় প্রাপ্ত শিক্ষকতার ধারা বজায় রেখে চিকিৎসক ও শিক্ষক হওয়াটাই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। বই, সঙ্গীত আর লেখালেখিতেই কাটে অবসর সময়ের বেশির ভাগ। স্বপ্ন দেখেন - মেধা ও মননশীলতার চর্চায় অগ্রগামী একটা বাংলাদেশের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here