অনেক সময়ই বিবাদে জড়ানোর মানসিকতা না থাকা সত্ত্বেও সাধারণ আলোচনা থেকে বিবাদে রূপ নিতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ধৈর্য ধারণ, মনভাবের পরিবর্তন ও কিছু কৌশল অবলম্বন করলে বিবাদ এড়ানো যেতে পারে।
দেখা যায় কিছু কিছু আলোচনা ধীরে ধীরে বিবাদ বা মনোমালিন্যে রূপ নেয়, যা শুরুতে কখনোই এমন নেতিবাচক ছিল না। অর্থাৎ হয়তো অনেক সুন্দর কোন আলোচনা বা আড্ডা অকস্মাৎই বিবাদে বা ভুল বোঝা বুঝিতে পরিণত হয়।
হয়তো গল্প বা আড্ডার মাঝেই হঠাৎ কেউ রেগে গিয়ে আপনার সামনে হাত ছুড়তে শুরু করল, আপনাকে কষ্ট দিয়ে কথা বলতে শুরু করল এবং এমনটা চলতেই থাকলো। সাধারণত বিভিন্ন হাস্য রসাত্মক উক্তি বা বিচক্ষণ আলোচনা থেকেই অনেক সময় বিবাদের সূত্রপাত হয়। এমন সব পরিস্থিতির উদ্ভব হলে নিজের ধৈর্য ও স্থিতিশীলতা ধরে রাখা কঠিন।
তবে ভুল বোঝাবুঝি বা অনাকাঙ্ক্ষিত বিবাদ এড়াতে এবং নিজের মনকে স্থির রাখা খুবই প্রয়োজন। নিচে আপনার আলোচনাকে বা মনোভাবকে ভুল পথে চালিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে এমন কিছু পয়েন্ট এবং সাথে সাথে এমন কিছু কৌশল উল্লেখ করা হল, যা আপনাকে এই অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে দূরে রাখবে।
কে ভুল আর কে সঠিক সেটি নির্ধারণে বিবাদ এবং সমাধান
আলোচনা বা কোন স্মৃতি চারণের সময় যে কোন তথ্য উপস্থাপন বা এমন বিষয় নিয়ে কে সঠিক এবং কে ভুল এটি প্রমাণ করতে গিয়ে অনেক সময়ই সুন্দর কোন আলোচনা অনিচ্ছাকৃতভাবেই বিবাদে রূপ নিতে পারে। আবেগ এবং যুক্তি সব সময় আমাদের সবাইকেই সঠিক ভাবতে অনুপ্রাণিত করে।
ফলে সবার কাছেই মনে হয় যে সে নিজেই সঠিক তথ্য উপস্থাপন করছে এবং সঠিক বলছে। এমন সময়ে বিবাদ এড়াতে সঠিক তথ্য উপাত্যে গুরুত্ব না দিয়ে বরং মূল বিষয়বস্তু এবং আবেগ ঘন স্মৃতি চারণে মনোযোগ দিন।
সমস্যা মূলত কার সেটি নিয়ে বিবাদ এবং সমাধান
কোন সমস্যার দায় সব সময়ই আমরা অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার মনোভাব প্রদর্শন করি। এ ধরণের মনোভাব থেকেও অনেক সময়ই সাধারণ আলোচনা বিবাদে রূপ নেয়। এমন অবস্থায় একমাত্র সমাধান হল এ ধরণের মনোভাব এড়িয়ে চলা।
অন্যের মত পরিবর্তনের প্রয়াসে বিতর্ক এবং সমাধান
অনেকের কাছেই, বিশেষ করে দম্পতীদের কাছে মনে হয় অপর জনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলেই নিজের আধিপত্য বজায় রাখা যাবে এবং অধিকাংশ সমস্যা এর মাধ্যমেই দূর হয়ে যাবে। সাধারণ কথা বার্তার সময়েও এ ধরণের মানসিকতার কারণে বিবাদের সূত্রপাত হয়।
এ ধরণের বিবাদ এড়াতে অন্যের মতের পরিবর্তনে নিজের মানসিক প্রশান্তির মতো মানসিকতা বর্জন করা প্রয়োজন। এতে অনেক বিবাদ এড়ানো সম্ভব হবে।
ভুল বোঝাবুঝি থেকে বিবাদ এবং সমাধান
অনেক সময় একমত হওয়া সত্ত্বেও একে অপরকে ভুল বোঝার কারণে বিবাদের সূত্রপাত হয়। এ সমস্যা এড়াতে একে অপরকে দোষারোপ করার আগে নিজেরা কি ভাবছেন বা কি বলতে চাইছেন সেটি ধৈর্যের সাথে খুলে বলুন এবং তার কথাও ধৈর্য সহকারে শুনুন। ভুল বোঝাবুঝি এবং বিবাদ উভয়ই দূর হয়ে যাবে।
নিজের যুক্তি শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে গিয়ে বিতর্ক এবং সমাধান
সাধারণ যে কোন আলোচনা বা আড্ডা বিবাদে পরিণত হতে পারে শুধুমাত্র আধিপত্য বিস্তারের মানসিকতার কারণে। অনেক সময়ে দেখা যায় সবার মধ্যে আমিই শ্রেষ্ঠ- এমন মনোভাব অন্যের অস্বীকৃতির কারণ হয় এবং এতে বিবাদের সৃষ্টি হয়।
এমন সমস্যা এড়াতে নিজের মতের প্রতি আস্থা রাখার পাশাপাশি অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধও রাখা প্রয়োজন। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত বিবাদ এড়ানো যাবে।
এ ধরণের প্রয়াস অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত বিবাদ মেটাতে আপনার ইতিবাচক মনোভাবকে আরও ত্বরান্বিত করবে এবং ব্যক্তিত্বকে সমুন্নত করবে।
লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/fixing-families/202108/5-ways-conversations-break-down\
অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা
স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে