সুস্থ থাকতে কেন রাতের ঘুম প্রয়োজন

সুস্থ থাকতে কেন রাতের ঘুম প্রয়োজন

শারীরিক সুস্থতা জন্য স্বাস্থ্যকর ঘুম খুবই প্রয়োজন। কারণ দিনশেষে দৈহিক ও মানসিক প্রশান্তির জন্য ঘুমটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেয়।

পর্যাপ্ত ঘুম দুশ্চিন্তা কমায়, বাড়ায় স্মৃতিশক্তি এবং দূরে রাখে কঠিন অসুখকে। অথচ অনেকেই কম ঘুম হওয়ার সমস্যায় ভোগেন। সময় মতো ঘুমানোর জন্য বিছানায় গেলেও এপাশ-ওপাশ করতে করতে আর ঘুম হয় না। বরং চেপে ধরে দুনিয়ার সব চিন্তা ও বিষণ্ণতা। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে অবসাদ ভর করে দৈনন্দিন জীবনে। আর তাই রাতে ভালো ঘুম কেন প্রয়োজন জেনে নিন।

ঘুমের কাজ কী কী

সারাদিনে শরীরের প্রত্যেকটি কোষে নানান জৈব রাসায়নিক কাজকর্ম চলে। এই কাজকর্মগুলো কোষের মধ্যে তৈরি করে ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ। এমনকি মস্তিষ্কের কোষেও এমন ক্ষতিকর বর্জ্য রাসায়নিক তৈরি হয়ে থাকে। সঠিক সময়ে কোষগুলো বর্জ্য বের করার সময় না পেলে শরীরে প্রদাহকারক পদার্থের মাত্রা বাড়তে শুরু করে এবং কমতে শুরু করে ইমিউনিটি।

স্মৃতিশক্তির বিষয়টিও নির্ভর করে ঘুমের উপর। ঘুমের মধ্যেই অপ্রয়োজনীয় স্মৃতিকে ব্রেন মুছে দেয় ও প্রয়োজনীয় স্মৃতি ধরে রাখে। তাই ভালো ঘুম হলে, মন ভালো থাকে। এছাড়া ভালো ঘুম হার্ট শক্তিশালী রাখে। পর্যাপ্ত ঘুমে রক্তে ইনসুলিনের ক্ষরণ ভালো হয়। সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধ হয়। স্থূলতার ঝুঁকিও কম থাকে।

স্লিপ অ্যাপনিয়া

ভালো ঘুম না হলেই শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা। আর ভালো ঘুমের অভাবের অন্যতম কারণ হল স্লিপ অ্যাপনিয়া। এই সমস্যায় ঘুমের মধ্যেই রোগীর অজান্তে শ্বাসক্রিয়া সামান্য সময়ের জন্য বারবার বন্ধ হয়ে যায়।

ফলে ঘুম ভেঙে যায় বারবার। গভীর ঘুম হয় না। এইসব রোগীদের শ্বাসনালীতে সঠিক মাত্রায় বাতাস ঢুকতে না পারায় রাতে শোওয়ার সময় নাক ডাকেন। ঘুম থেকে ওঠার পর সতেজ অনুভব করেন না। কাজ করতে করতেই ঘুমে ঢুলে পড়েন।

বিস্ময়কর তথ্য হলো, প্রায় ১৭ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যায় ভোগেন। স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে বাড়ে হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের আশঙ্কা। স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণগুলো হলো- টনসিল ও অ্যাডিনয়েডস গ্ল্যান্ডের ফুলে ওঠা, শ্বাসনালীর চারপাশে ফ্যাট জমা, নাকের কোনো হাড় বাঁকা থাকা এবং নাকে পলিপ জমা ইত্যাদি।

শুধু স্লিপ অ্যাপনিয়াই নয়, ঘুম কম হলে ডিমেনশিয়ার মতো অসুখের আশঙ্কা বাড়ে। রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটে। এছাড়া মৃগী রোগীর ঘুম না হলে ওষুধ খাওয়ার পরেও সমস্যা বাড়ে। ঘুম না হলে মাইগ্রেনের রোগীর মাথাব্যথার সমস্যাও বৃদ্ধি পায়।

কতক্ষণ ঘুমানোর দরকার

৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী বাচ্চাদের প্রতিদিন ৯ থেকে ১১ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের দরকার ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুম। অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক ব্যক্তির সারাদিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের দরকার।

ভালো ঘুম কীভাবে ঘুমাবেন

শুধুমাত্র রাতে ঘুমানোর জন্যই বিছানা ব্যবহার করতে হবে। বিছানায় শুয়ে কোনোভাবেই টিভি বা মোবাইলে চোখ রাখা চলবে না। প্রত্যেকদিন রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে যাওয়া ও সকালে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। দিনের বেলায় ঘুমানো যাবে না। রাতে ঘরের সব রকমের আলো নিভিয়ে দিন আগেই। বিকেল ৫টার পর কফি, চা, কোমল পানীয় ও ভুলেও মদ্যপান করা চলবে না।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

Previous articleখারাপ অভ্যাস ত্যাগ ও নতুন অভ্যাস গড়ে তুলবেন যেভাবে
Next articleমনে হচ্ছে আমি আমার ভিতরে নেই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here