সন্তানকে শেখাবেন যেভাবে

0
66
পাঁচটি উপায় মেনে চললে হবে শিশুর মানসিক স্বাস্থের বিকাশ

সন্তানের সুস্থ মন মানসিকতার বিকাশের জন্য রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আর এই লক্ষ্যে আগে সন্তানের পিতামাতাকে নিজেদের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে সন্তানের সম্মুখে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

প্রতিটি সন্তানের পিতা মাতাই চান তাদের সন্তান যেন উত্তম মন মানসিকতা এবং চরিত্রের অধিকারী হয়। এই লক্ষ্যে তারা সকল সম্ভব প্রয়াসই করে থাকেন। ইতিবাচক মানসিকতা এবং উত্তম চরিত্র গঠনের একটি অন্যতম প্রধান অংশ হল রাগ বা ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করতে পারা।

সব পিতামাতাই চান তাদের সন্তান যেন তাদের রাগের বিষয়ে সচেতন হয় এবং সেটি নিয়ন্ত্রণের অভ্যাসও গড়ে তুলতে পারে। শিশুদের রাগ নিয়ন্ত্রণে মনস্তত্ত্ববিদগণ বলেন, এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় যেমন শিশুদের প্রচেষ্টা এবং ইতিবাচক মনোভাব গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি একই ভাবে পিতামাতার আচার-আচরণও সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ মানসিকতার বিকাশে শিশুদের শিক্ষার একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে অনুকরণ। আর পরিবারের সদস্য বিশেষ করে পিতামাতাকে দেখেই সন্তানরা অধিকাংশ বিষয় শেখে। তাই শিশুকে যে কোন কিছু শেখানোর জন্য সবার আগে পিতামাতাকে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।

আপনি যদি চান যে আপনার সন্তান রাগ নিয়ন্ত্রণে সফল হোক, তাহলে আগে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। সন্তানের সামনে একটি উৎকৃষ্ট ও ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।

আমাদের সবারই রেগে যাওয়ার ভিন্ন ভিন্ন কারণ রয়েছে। ব্যক্তি বিশেষে এই কারণগুলো ভিন্ন ভিন্ন হলেও নিয়ন্ত্রণে কিছু মৌলিক প্রক্রিয়া রয়েছে। মনস্তত্ত্ববিদগণ বলেন, যদি কেউ রাগ নিয়ন্ত্রণের অভ্যাস গড়ে তুলতে চায় তাহলে প্রথমত সেই ব্যক্তিকে আগে স্বীকার করে নিতে হবে যে, তার মধ্যে অযাচিত বা অনিয়ন্ত্রিত রাগ করার স্বভাব রয়েছে।

এই আত্ম স্বীকারোক্তিকে এড়িয়ে কখনোই রাগের সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এরপর থেকে রাগ নিয়ন্ত্রণের অন্যান্য কৌশলগুলো অবলম্বন করলে আশা করা যায় যে ব্যক্তি তার এই প্রচেষ্টায় অবশ্যই সফল হবে।

নিচে কিছু কৌশল তুলে ধরা হলো, যেগুলো অনুসরণ করে অভিভাবকগণ শিশুর ইতিবাচক অভ্যাস গঠনের লক্ষ্যে রাগ নিয়ন্ত্রণে নিজেদেরকে আগে প্রস্তুত করে তুলতে পারবে।

রাগ নিয়ন্ত্রণে রাগের কারণগুলো আগে জানা প্রয়োজন। কি কি কারণে বা কি কি পরিস্থিতিতে আপনি রেগে যাচ্ছেন বা রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সেগুলোকে চিহ্নিত করুন। কারণগুলো চিহ্নিত হলে সেগুলো নিয়ন্ত্রণের উপায়ও খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।

রাগ হলে বা মানসিকভাবে উত্তেজিত হলে ধৈর্য ধারণ করে সে বিষয় গুলোর সমাধান করতে চেষ্টা করুন। তাছাড়া সন্তানের সামনে সব সময় নিজের ইতিবাচক দিক গুলোই তুলে ধরুন এবং ধৈর্য ধারণ করে রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন।

সন্তানকে সঠিক শিক্ষা প্রদানে অন্যান্য পরিস্থিতির সাথে সাথে তাদের উপর রাগ করার মত বিষয় গুলোও আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অনেক সময়ই সন্তানের অনেক কাজে আপনি ধৈর্য হারা হয়ে রেগে যান। আর এটি অনেক সময় স্বাভাবিকও।

কিন্তু যদি আপনি সন্তানের উপর রেগে যান তাহলে আপনার সন্তানও এটাই অনুকরণ করবে। তাই তাদের শেখানোর জন্য রেগে যাওয়ার বদলে তাদের বুঝিয়ে বলতে হবে। বিকল্প উপায়ে তাদের বিভিন্ন অসংগতি এবং অবাধ্যতা দূর করার প্রয়াস করতে হবে।

এতে আপনার উদ্যেশ্য সাধন যেমন সফল হবে তেমনি সন্তানও ধীরে ধীরে আপনার আচরণ অনুকরণ করে নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনার প্রয়াস করবে।

রাগ আমাদের সবার জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ। তবে অতিরিক্ত রাগ বা অনিয়ন্ত্রিত রাগ শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হয়। যেহেতু প্রতিটি পিতা-মাতাই চায় তার সন্তান ভালো থাকুক, সু সন্তান হিসেবে বেড়ে উঠুক।

তাই তাদের প্রয়াস থাকে সন্তানের ছোট বেলার না বুঝে রাগ করার প্রবণতা যেন বড় হওয়ার পরেও তাদের মধ্যে স্বভাবজাত হয়ে থেকে না যায়। আর এই প্রয়াস সফল করতেই অভিভাবককে আগে নিজেদের রাগকে নিয়ন্ত্রণে এনে তারপর সন্তানের মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে আসার প্রচেষ্টা করতে হবে। আর এটিই সফল হওয়ার সর্বোত্তম উপায়।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/inside-out-outside-in/202107/anger-knowing-what-sets-you-and-ways-manage-it

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

করোনায় স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

Previous articleরাগ মানুষের যৌন উত্তেজনা কমায়
Next articleদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৪ হাজার মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়-বিবিএস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here