বড়দিনের উৎসব থেকে বঞ্চিত মানসিক রোগীরা

বড়দিনের সময়টাই হলো পরিবার আর বন্ধুদের আনন্দ উদযাপন আর ফুর্তির সময়। অন্যান্য সময় যারা এই সুযোগ পায় না, বিশেষ করে মানসিক সমস্যাক্রান্ত যারা আছেন এই সময়কে তারা ভালোভাবেই কাজে লাগাতে পারেন।

মানসিক অসুস্থতা বর্তমানে সকল বয়স ও সব প্রজন্মের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে প্রতি চার জনে একজন মানসিক সমস্যায় ভুগছে। জীবনের নানা সময়ে তারা বিষণ্নতা, হতাশা, উত্তেজনাসহ নানান মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। একজন মানুষের সুস্থ মন ও আবেগ তার শারীরিক সুস্বাস্থ্যের জন্য আবশ্যক। মানসিকভাবে অসুস্থ থাকলে একজন মানুষ মদ বা অন্যান্য মাদকের প্রতি ঝুঁকে পড়তে পারে।

পুরো জাতি যখন বড়দিন উদযাপনে ব্যস্ত তখন এমন কিছু মানুষ আছে যারা এসব থেকে বাইরে। মানসিক অসুস্থতার কারণে তারা এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। কেননা তারা সবার সাথে এই আনন্দে যোগ দিতেও আগ্রহ বোধ করে না।

এই সমস্যাগ্রস্থদের একাকিত্ব দূর করে তাদের আনন্দের অংশিদার করে নেয়ার সময় এখনি। যে পরিবেশে আমরা বাস করি, মানসিক অসুস্থতা দূর করতে তার ভুমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কঠোরতা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভাল নয়। নিম্ন আয়ের লোকজন, মানসিক সমস্যার ঝুঁকিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কাছে কঠোরতা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

মানসিক স্বাস্থ্য সেবার এই অধিক গুরুত্বের পরেও অন্যান্য খাতের তুলনায় এই খাতে বরাদ্দ খুবই কম। এটা শুনতে বেশ নাটকীয় হলেও বাস্তব এটাই যে, দীর্ঘদিন ধরে এরকম অবহেলার কারণে NHC ও তার রোগীদের বিভিন্ন সময়ে অজস্র সমস্যা ভোগ করতে হচ্ছে। সঠিক সময়ে বিশেষজ্ঞের সাক্ষাৎ, সেবাকেন্দ্রে বেড পাওয়া, পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্সের সংকট থাকার কারণে NHC তার রোগীদের যথাযথ সেবা দিতে ব্যর্থ হয়।

মানসিক স্বাস্থ্যসেবা চ্যালেঞ্জকে এখন অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। ইংল্যেন্ডের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য NHC এমন একটি পরিকল্পনা করেছে যাতে করে পুরো দেশের মানসিক স্বাস্থ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।

আবারো ফিরে আসা যাক বড়দিনের দিকে। অনেক চ্যালেঞ্জ থাকার পরেও মানসিক সমস্যাগ্রস্থ লোকদের সাহায্য করার জন্য নানান দাতব্য ও জনকল্যাণমূলক সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে, যাতে করে বড়দিনের উৎসব হয় সকলের জন্য আনন্দের, বিনোদনের। এতসব চাপ থাকার পরেও যাদের জরুরি সাহায্যের দরকার তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার মত অনেকে কাজ করে যাচ্ছে।

পরিবার, বন্ধু ও অন্যান্যদের মাথায় রাখা উচিৎ যে, অস্বাভাবিক ব্যবহার যেমন আতংকিত হওয়া, অকারণে উত্তেজিত হওয়া, অযথাই ব্যস্ত হওয়া ইত্যাদি হলো মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ। তাদের প্রতি ইতিবাচক আচরণই পারে  তাদের স্বাভবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে। সমস্যাগ্রস্তরা নিরাপদ আশ্রয় পেলে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে এসব তরুণদের দ্বারা অসাধ্য সাধন করা যায়। হতাশা, বিষণ্নতা খুব সহজেই একজন মানুষকে আতংকগ্রস্ত করে ফেলে। মানসিক সমস্যাগ্রস্থদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ বাড়িয়ে দিক বড়দিনের পবিত্র আনন্দ।

তথ্যসূত্র- দ্যা গার্ডিয়ান
(https://www.theguardian.com/healthcare-network/2016/dec/21/christmas-is-an-isolating-time-for-people-with-mental-health-problems)

আব্দুল্লাহ আল মামুন, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম

Previous articleযে কোনো কাজ করার আগেই অনেক ভয় এবং চাপ অনুভব করি
Next articleডা. তানজিনা আহমেদ মিম্মি আর নেই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here