গর্ভকালীন সময়ে মানসিক চাপ কমাতে যা করণীয়

0
55

গর্ভকালীন সময়ে নানা ধরনের দুশ্চিন্তা মধ্যে থাকেন নারীরা। বিশেষ করে যারা প্রথমবার সন্তানের মা হবেন। গর্ভধারণের নিশ্চিত খবর পাওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের অনুভূতির মধ্য দিয়ে যান তারা। চাপ, উদ্বেগ, বিস্মিত বা ভৌতিক অনুভূতি হয় অনেকের। তবে এই অনুভূতিগুলো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।

গর্ভধারণ জীবনের বড় পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম। তাই এই সময়ে মানসিক চাপ একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিছু পরিস্থিতিতে চাপ হবু মায়ের জন্য ভালোও হতে পারে। কারণ, এটি তাকে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে এবং নতুন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে সাহায্য করে।

তবে অতিরিক্ত মানসিক চাপ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে, যা গর্ভবতী এবং অনাগত শিশু দুজনের জন্যই সমস্যা সৃষ্টি করে। এই সময়ে মানসিক চাপের বেশ কিছু কারণ খুঁজে বের করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে এমন পরিস্থিতিতে গর্ভবতীরা কীভাবে এই চাপ সামলাবেন, তেমন কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

যে কারণে গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ হতে পারে

যখন কারও গর্ভাধারণ অপরিকল্পিত হয় বা গর্ভপাতের মতো নেতিবাচক অভিজ্ঞতা থাকে, তখন হবু মা মানসিক চাপ অনুভব করতে পারেন। অনেক সময় শিশু জন্মের কিছু সময় পরপরই মৃত্যুবরণ করে। তখন সেই খারাপ স্মৃতি নতুনভাবে গর্ভধারণের পর হবু মাকে মানসিক চাপের মুখোমুখি ফেলতে পারে।

আর্থিক সমস্যা, জায়গা পরিবর্তন বা চাকরি পরিবর্তনের মতো পরিস্থিতিও গর্ভাবস্থায় আপনাকে মানসিক চাপের মধ্যে ফেলতে পারে। এমনকি পরিবারের কোনো প্রিয়জনকে হারিয়ে ফেলার শোক, উদ্বেগ, হতাশা বা গর্ভবতী হওয়ার আগে থেকে চলমান অসুস্থতা, যেমন উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে তা নিয়ে বারবার ভাবলে চাপ তৈরি হয়। মাদকের মতো অন্য সমস্যাগুলোও মানসিক চাপের জন্য দায়ী হতে পারে।

মানসিক চাপ আপনার সুস্থতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা থেকে মাথাব্যথা, ঘুমের সমস্যা, দ্রুত শ্বাস–প্রশ্বাস নেওয়া ও অস্বাভাবিক হৃদ্‌স্পন্দনের দিকে পরিচালিত করতে পারে।

অনেক সময় গর্ভবতী হলে হতাশা ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে পড়ে। কোনো একটি বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনাও বাড়তে থাকে। এসব মানসিক চাপ আপনার খাবারেও অরুচি আনতে পারে। স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা দেয়।

গর্ভাবস্থায় এমন সমস্যা টানা চলতে থাকলে সেটা অনাগত সন্তানের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে। এটি শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে। শিশুর শৈশবে আচরণগত নানা সমস্যাও হতে পারে, মায়ের এমন চাপের ফলে।

চাপ থেকে দূরে থাকার উপায়

গর্ভধারণের পরিকল্পনা করার আগে থেকে আপনার মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার নিশ্চিত করতে হবে। গর্ভাবস্থায় চাপমুক্ত থাকার জন্য আনন্দে থাকার চেষ্টা করুন। যে পরিস্থিতিগুলো আপনাকে চাপ দেয়, তা লিখে রাখুন। আপনি যখন চাপের মধ্যে থাকেন, তখন আপনার কী হয়, তা লেখার চেষ্টা করুন।

গর্ভাবস্থায় কিছু প্রস্তুতিমূলক বই পড়ুন। কারণ, জ্ঞান অর্জন মানসিক চাপকে পরাজিত করার সেরা উপায়। এই সময়ে জাঙ্ক ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। সঠিক খাবার খান এবং আপনার ডায়েটে প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করুন।

প্রতিদিন নিয়ম করে সাঁতারকাটা, হাঁটা বা ব্যায়াম করুন। যোগব্যায়াম, ধ্যান ও শ্বাসের ব্যায়ামগুলো করলে মানসিক স্থিরতা মিলবে। কিছুটা সময় কাটান নিজের মতো করে। নিজের অনুভূতি সম্পর্কে নিজের সঙ্গে খোলামেলা হওয়ার চেষ্টা করুন।

নিজের জন্য বরাদ্দকৃত সময়ে এমন কিছু করুন, যা আপনাকে শান্তি দেয়। নিজের আনন্দকে গুরুত্ব দিন। আপনার যেসব বিষয়ে শখ, সেগুলোর চর্চা করুন।

সূত্র: ফেমিনা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে 

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

 

 

Previous articleসচেতনতার অভাবে ‍শিশু-কিশোররা যথাযথ সহানুভূতি পায়না
Next articleএকা থাকলে ভয় কাজ করে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here