খারাপ অভ্যাস ত্যাগ ও নতুন অভ্যাস গড়ে তুলবেন যেভাবে

খারাপ অভ্যাস ত্যাগ ও নতুন অভ্যাস গড়ে তুলবেন যেভাবে

খারাপ বা বদ অভ্যাস আমাদের ব্যক্তিত্ব ও মানসিকতাকে কলুষিত করে এবং শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হয়।

তাই নিজের স্বার্থেই এই খারাপ অভ্যাস গুলো ত্যাগ করে এবং ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার প্রয়াস করা উচিৎ, যেন আমাদের ব্যক্তিত্ব ও মানসিকতা এবং স্বাস্থ্য সুগঠিত হয়।

খারাপ অভ্যাস বা বদ অভ্যাস হল সেসব অভ্যাস যেগুলো ক্ষতিকারক জেনেও ব্যক্তি সহজে ত্যাগ করতে পারে না। যেমন- অতিরিক্ত খাওয়া, নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা, অত্যধিক ক্রোধ, মাদকাসক্তি, আলসেমি ইত্যাদি।

এ ধরণের অভ্যাস প্রসূত কাজগুলো বর্তমানে বেশ আনন্দদায়ক মনে হলেও এর মূল প্রভাব ভবিষ্যৎ জীবনে দেখতে পাওয়া যায় এবং এর ফল হয় অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক। যা আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে এলোমেলো করে দেয়।

তাই বর্তমানে কিছুটা কষ্ট করে হলেও যদি এসব অভ্যাস ত্যাগ করা যায় এবং ভালো অভ্যাস গঠন করা যায় তাহলে শারীরিক ও মানসিক উন্নতি ত্বরান্বিত হবে এবং ভবিষ্যৎ জীবনও সমৃদ্ধ হবে। নিচে কিছু কৌশল তুলে ধরা হল যেগুলোর মাধ্যমে খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করে ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার সফল প্রচেষ্টা করা যেতে পারে।

খারাপ অভ্যাসের প্রেক্ষাপট গুলো চিহ্নিত করুন

খারাপ অভ্যাসের প্রেক্ষাপট  হল সেসব পরিস্থিতি যেসব পরিস্থিতি আপনাকে খারাপ কাজ করতে অনুপ্রেরণা যোগায়। ঐ অবস্থায় উক্ত কাজ গুলো করার ফলে এক ধরণের মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায় যা ব্যক্তিকে বার বার, একটি দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব থাকা স্বত্বেও, ঐ কাজ করতে উৎসাহিত করে।

এ ধরণের পরিস্থিতিগুলো চিহ্নিত করতে পারলে সেগুলোর দ্বারা প্রেরিত হয়ে নেতিবাচক বা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজগুলো করা থেকে বিরত থাকা যাবে। যেমন- যারা মদ্যপান বা ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে চান তাদেরকে এ কাজগুলোর পরিস্থিতি এড়িয়ে চলার পরামর্শ প্রদান করা হয়। অভ্যাস পরিবর্তনের প্রথম ধাপ হিসেবে প্রেক্ষাপট পরিবর্তন করা খুবই সহায়ক ভূমিকা রাখে।

বিকল্প পরিকল্পনা করুন

কোন বিশেষ অবস্থায় খারাপ অভ্যাস প্রসূত কোন কাজ না করে তার বিকল্প কি করা যায় বা কিভাবে কোন পরিকল্পনা দ্বারা ঐ কাজটিকে না করার প্রয়াস করা যায় সেই পরিকল্পনা করুন। এ ধরণের বিকল্প কাজের পুনরাবৃত্তি ধীরে ধীরে আপনাকে খারাপ অভ্যাস ত্যাগে মানসিকভাবে প্রস্তুত করবে।

নিজের আবেগের সাথে লড়াই করুন

ব্যক্তি খারাপ অভ্যাস থেকে করা বিভিন্ন কাজের ইচ্ছেকে দমন করার প্রয়াস করতে পারে। আর এজন্য তাকে তার আবেগের সাথে লড়াই করতে হবে এবং নিজেকে এটা বোঝাতে হবে যে এ ধরণের অভ্যাস তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ব্যক্তি বার বার এর কুফল গুলো ভাবার মাধ্যমে নিজের মধ্যে এই আবেগ নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে পারে।

আচার আচরণে পরিবর্তন নিয়ে আসুন

শুধু খারাপ অভ্যাস ত্যাগের পরিকল্পনা বা ইচ্ছা কখনোই সুফল বয়ে আনবে না যদি সেটিকে বাস্তব কার্যকরী রূপ দেওয়া না হয়। তাই, খারাপ অভ্যাস ত্যগের ইচ্ছা অনুসারে ব পরিকল্পনা অনুসারে প্রয়োজনীয় কাজগুলোও করুন। অর্থাৎ চিন্তা ভাবনার সাথে সাথে আচার আচরণেও পরিবর্তন নিয়ে আসুন।

উপরের আলোচনা থেকে এটি বলা যায়,  উল্লিখিত পরিকল্পনা ও কাজগুলো করলে সেটি আপনার মধ্য থেকে খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করে ভালো বা নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করবে এবং আপনাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করে তুলবে।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/science-choice/202108/5-strategies-internalize-your-new-habits

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে

Previous articleকিংবদন্তী নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. এল.এ. কাদেরীর ইন্তেকাল
Next articleসুস্থ থাকতে কেন রাতের ঘুম প্রয়োজন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here