একাকীত্ব সকল বয়সীদের সমস্যা

0
69

যুক্তরাজ্যের ইতিহাসের প্রথম একাকীত্ব বিষয়ক মন্ত্রী ট্রেসি ক্রাউচ বলেছেন-‘একাকীত্ব সকল বয়স নির্বিশেষে একটি সমস্যা হিসাবে স্বীকৃত হওয়া উচিত।’ তিনি প্রথমবারের মতো একাকীত্ব কৌশল প্রকাশ করেছেন।
তিনি মনে করেন, একাকীত্ব নিয়ে সমাজের প্রচলিত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে এবং কেউ যদি একাকীত্ব বোধ করে সেটা স্বীকার করতে পারার মতো মানসিকতা তৈরিতে একটি জাতীয় সংলাপের প্রয়োজন।
লন্ডনে এক সম্মেলনে ট্রেসি ক্রাউচ বলেন “সরকার আমাদের জন্য বন্ধু তৈরি করতে পারবে না”, কিন্তু “সামাজিক সংযোগ” বাড়ানোর কিছু কৌশল এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এবং একাকীত্ব দূর করতে কোন বিষয়গুলো ভাল কাজ করবে সে বিষয়েও ভাল প্রমাণ পেতে সহায়তা করবে।
মন্ত্রী আরও বলেছেন, একাকীত্বকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার মানসিকতা অনেকটা এমন হতে পারে, “এক দশক আগে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য কোন অবস্থায় ছিল”।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত একাকীত্বের কৌশল সামনের শীঘ্রই প্রকাশ পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সেখানে বয়স্কদের একাকীত্বের বিষয়টিকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়া হবেনা। তবে একাকীত্বের অনুভূতিগুলো কিভাবে মানুষের জীবনে বহুবার গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে সে বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে।
এটি নিয়ে একটি সাধারণ ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, একাকীত্বের এই সমস্যা জীবনের শেষ পর্যায়ে দেখা দেয়। এ বিষয়ে একাকীত্ব দূর করার বিষয়ে এক প্রচারণায় বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
দাতব্য সংস্থাগুলোর একটি জোট সেই সম্মেলনের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছিল। ওই সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, তিনি বিচ্ছিন্নতার নেতিবাচক প্রভাব দেখে স্তম্ভিত হয়ে পড়েছেন।
অল্পবয়সী ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে যারা নতুন বাবা মা হয়েছেন, এমন কেউ যারা তাদের পরিবারের থেকে আলাদা হয়ে পড়েছেন, কোন ঘটনায় ভীষণ শোকগ্রস্ত অথবা যারা জীবন সায়াহ্নে রয়েছেন তাদের সবাইকে এই একাকীত্ব গ্রাস করতে পারে।
এই একাকীত্বের অনুভূতি থেকে বড় ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যার হতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “এই ধরণের স্বাস্থ্য-ঝুঁকি সে পরিমাণ গুরুত্ব দিয়ে মোকাবিলা করা উচিত যেভাবে কিনা ধূমপান বা স্থূলতা মোকাবিলা করা হয়।”
এবং এই কৌশল প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন পরিবহন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসহ সব জায়গায় প্রয়োগ করতে হবে। মন্ত্রী এটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে যেসব স্থানীয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান একাকীত্বে দূর করার ক্ষেত্রে বড় ধরণের প্রভাব ফেলতে পারতো, সেগুলো কঠোর নীতিমালার মুখে পড়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার পর্যায়ে এবং স্থানীয় সরকার পর্যায়ে যেসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিলো সেগুলো হয়তো কিছু মানুষের সঙ্গে তাদের কমিউনিটির সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে।
মিস ক্রাউচ বলেন, “একাকীত্বে ভোগার পরও আপনার কিছুই হয়নি এমন ভান করার কোন যুক্তিই নেই” কোন বক্তব্য নেই যা ঘটেছে না,” বলেছেন এম ক্রাউচ। এই সমস্যাটি কতোটা বিস্তৃত ও প্রকট সে বিষয়ে এই কৌশল একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেছেন, জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর একাকীত্ব পরিমাপের জন্য আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ সংজ্ঞা তৈরি করবে, যেটা কিনা একাকীত্ব হ্রাস করার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো কাজ করবে, সে বিষয়ে আরও ভাল প্রমাণ সরবরাহ করবে।
কিন্তু মিস ক্রাউচ সম্মেলনে বলেন, একাকীত্ব রাজনৈতিক এজেন্ডা বাড়িয়ে দিয়েছিল। “সরকার এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলোর একটি হিসেবে একাকীত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে।”
অনুবাদ করেছেন: আফসানা আফরিন
সূত্র: বিবিসি

Previous articleমানসিক চাপের শহর ঢাকা
Next articleবিএপি এর সাধারণ সম্পাদক হলেন ডা. মোহাম্মদ তারিকুল আলম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here