একটুখানি সুখ কিনুন!

অর্থ এবং সুখের মধ্যে যে সম্পর্ক তা নিয়ে গবেষণার ব্যাপারটি কিছুটা জটিল। কিন্তু আমরা এই বিষয়টি সম্পর্কে আমরা আস্তে আস্তে বুঝতে শুরু করেছি।
প্রথমত যদি আমরা মানুষের আয়ের দিকটি বিবেচনা করি তাহলে দেখা যায় যে, বেশি বেতনের চাকুরী মানুষকে সুখী রাখবে বিষয়টি এমন নয়। ড্যানিয়েল কাহ্নেমান এবং তার সহকর্মীরা একটি জরিপ করেছেন। সেখানে দেখা গেছে যে সাধারণত মানুষের বেতন বাড়লে তারা সুখী হয়। তবে সেটিও একটি নির্দিষ্ট ধাপ পর্যন্ত। এরপর যতই বাড়ুক না কেন তাদের মধ্যে খুব বেশি পরিবর্তন আসে না। সাধারণত এই সুখী হওয়ার মাত্রা বাৎসরিক ৭৫০০০ ডলার থেকে ১০০০০০ ডলার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। যাই হোক, এটি বলা যায় যে জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার সাথে আয় বৃদ্ধির একটি সম্পর্ক চলমান থেকেই যায়।
গবেষকরা মনে করেন সুখী হওয়ার দুটি দিক রয়েছে একটি জ্ঞানীয় এবং একটি আবেগীয়। এই দুটি দিকের মধ্যে রয়েছে বিস্তৃত সুখ, আনন্দ, উপভোগ, হাসি কিংবা অট্টহাসি। মানুষ যখন সুখী থাকে তখন তারা উপভোগ করে সবকিছু, অনেক বেশি হাসে। এই আবেগীয় সুখ ও যদিও ৭৫০০০ ডলার পর্যন্ত বাৎসরিক আয়ের সাথে সম্পর্কিত। তবে এই আবেগীয় সুখের সাথে এছাড়াও আরও নানা বিষয় জড়িত রয়েছে। যেমন শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা এবং একাকীত্ব বোধ না করা।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, সময় বাঁচানোর জন্য অর্থ ব্যয় করা কোন জিনিসপত্র কেনার চেয়ে বেশি আনন্দ দেয়। এই গবেষণার জন্য যারা গবেষণায় অংশগ্রহণ করেছিল তাদের সময় বাঁচানোর জন্য অর্থ প্রদান করা হয়েছিল। যেমন বাগানের মালী ভাড়া করার জন্য, ঘর পরিষ্কার করার লোকের জন্য, অথবা জিনিসপত্র কেনার জন্য ঠিক এই পরিমাণ অর্থ দেয়া হয়েছিল। এই গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে নিজেদের জন্য সময় বাঁচাতে যদি মানুষ অর্থ ব্যয় করে এতে তারা নিজেদের জন্য কিছু কিনলে যে আনন্দ পায় তার চেয়ে বেশি আনন্দ পায়।
আমরা এই গবেষণাগুলোর ফলাফল পর্যালোচনা করলে বুঝতে পারব এবং আপনাদের পরামর্শ দিতে পারব যে কিভাবে কিভাবে অর্থ নানাভাবে আমাদের সুখী করে। যদি আপনার কাছে সময়ের মূল্য বেশি হয় তাহলে সময় বাঁচানোর জন্য অর্থ ব্যয় করা আপনার জন্য একটি আনন্দের ব্যাপার। সেই তুলনায় আধুনিক প্রযুক্তি অথবা দামি মোবাইল কেনার পেছনে অর্থ ব্যয় করা আপনাকে সুখী করতে পারবে না। আর যদি আপনি দামী ফোনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে খুব খুশি হয়ে থাকেন অথবা মানুষকে আপনার দামি ফোনটি দেখাতে পছন্দ করে থাকেন তবে আগের উদাহরণটির বিপরীত হবে। আমার মনে হয় আপনি যা পছন্দ করেন তার পেছনে আপনার অর্থ ব্যয় করে হলেও নিজেকে খুশি করা উচিৎ। সময় এবং আশে পাশের মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য দামি জিনিসপত্র না কিনে নিজের পছন্দ গুলোর পেছনে অর্থ ব্যয় করা বুদ্ধিমানের কাজ।
তথ্যসূত্র-
(https://www.psychologytoday.com/blog/cutting-edge-leadership/201709/how-buy-little-happines)
কাজী কামরুন নাহার, আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মনেরখবর.কম

Previous articleসাধারণ বিষয় নিয়ে একদম নার্ভাস হয়ে যাই
Next articleঔষধ খাওয়া বাদ দিলেই সমস্যা শুরু হয়ে যায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here