অভ্যাস কী বদলানো সম্ভব?

অভ্যাস কী বদলানো সম্ভব?
অভ্যাস কী বদলানো সম্ভব?

আমাদের মধ্যে গড়ে ওঠা বিভিন্ন অভ্যাসের সঙ্গে মস্তিষ্কের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকায় অভ্যাসগুলো ভেঙে ফেলা সত্যিই খুব কঠিন হয়, যা আমরা – অভ্যাস কীভাবে আসক্তিতে পরিণত হয় -এই প্রবন্ধে আলোচনা করেছি। আমাদের মস্তিষ্কের ভিতরে অবস্থিত নিউরাল সার্কিটের জন্য এই অভ্যাসগুলো আমাদের মধ্যে কর্মসূচির মতো দৃঢ় হয়ে গেঁথে যায়। তারপর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মস্তিষ্কের মাধ্যমে এই কর্মসূচিগুলো মানুষের নিজের আচার-আচরণের মধ্য দিয়ে বাইরে প্রকাশ পায়। সেই সঙ্গে এই আচরণগুলো বারবার ঘটতে দেখা যায়।

এই অভ্যাসগুলো ভেঙে ফেলা কঠিন হলেও তা একেবারে অসম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নীচে কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হল-

মনোযোগী হওয়া জরুরি- সবসময়ে আমাদের প্রবণতা থাকে যে পুরনো উপায়কে টপকে যাওয়া। এক্ষেত্রে নিজের করণীয় কাজ এবং সেই কাজ করে আপনার কীরকম অনুভূতি হচ্ছে সে বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। দেখতে হবে যে আমরা আমাদের অভ্যাসগুলো থেকে যা কিছু পাচ্ছি, তা আমাদের গভীরভাবে সাহায্য করছে কিনা।
অভ্যাসের রদবদল ঘটানো- বর্তমান অভ্যাসের বদলে কম ক্ষতিকারক কিছু বিষয়ে অভ্যস্ত হওয়া উচিত। যেমন- যদি আপনি চেষ্টা করেন যে অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান করা ছেড়ে দেবেন তাহলে আপনার কাছেপিঠে চটচটে জেলির মতো মিষ্টি খাবার বা গাম রাখতে হবে, যাতে যখন খুশি ইচ্ছে করলেই আপনি তা খেতে পারেন। কারণ ওই বস্তুটি সহজলভ্য। আবার উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত ফ্যাটজাতীয় খাবারদাবারের বদলে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আপনার পছন্দ আপেল ও নাশপাতি জাতীয় ফল হওয়া উচিত, আপেল ও চকলেট আইসক্রিম নয়। বাড়িতে সিগারেট রাখাও চলবে না।
বিপদ বা ঝুঁকি এড়ানো- যদি কোনও একটি বিশেষ পরিস্থিতি বা কাজ করার সময়ে আপনার খাওয়াদাওয়া বা সিগারেট খাওয়া বেড়ে যায়, যেমন- বেশি রাতে সিনেমা দেখার সময়ে এহেন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে, তখন এইধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বা পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা জরুরি।
অভ্যাসকে সঠিকভাবে বোঝা বা অনুধাবন করা- নিজেকে অভ্যাসের দাস না করে অভ্যাসগুলোকে সঠিকভাবে বোঝা জরুরি। প্রতিবার সিগারেট ধরানোর আগে নিজের মধ্যে একপ্রকার সচেতনতা গড়ে তোলা দরকার। যে অভ্যাস নিজের অজান্তেই নিজের মধ্যে গড়ে ওঠে তা দূর করার জন্য SWOT (শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ এবং বিপদ) নীতির বিশ্লেষণ করতে হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে নিজের শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ এবং ভয়- এগুলোর দ্বারা নিজের অভ্যাস সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
এগুলো লিখে রাখা প্রয়োজন- কুঅভ্যাস বা মন্দ আচরণ রদ করার সহজ পথ হল তা লিখে রাখা। মনে লিখে রাখার চেয়ে কাগজ-কলমে লিখে রাখা এক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী হয়। খাবারদাবার ও ক্যালোরির হিসাব রাখার জন্য অ্যাপ ডাউনলোড করা বা সিগারেট অথবা অন্যান্য নেশার দ্রবের প্রতি আসক্তি কাটানো ও এগুলোর সঙ্গে স্বাস্থ্যের ঝুঁকির বিষয়টা মনে রেখে সাহায্যকারী অ্যাপ ডাউনলোড করা প্রয়োজন।
এই সমাধান সূত্রগুলো প্রয়োগ করার চেষ্টা করা শুরু করলে তা ভালো অনুভূতির জন্ম দেয়। কিন্তু যদি সাফল্যের কথা চিন্তা না করে আপনি বা আপনারা এগুলোর প্রয়োগ করতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসার সাহায্যও নিতে হবে আপনাদের। একা নিজের সাহায্যে আসক্তির সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধানের জন্য প্রায়শই বিশেষজ্ঞের সহায়তার প্রয়োজন হয়।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে চিকিৎসকের সরাসরি পরামর্শ পেতে দেখুন: মনের খবর ব্লগ
করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিসেবা পেতে দেখুন: সার্বক্ষণিক যোগাযোগ
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
করোনায় সচেতনতা বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও বার্তা দেখুন: সুস্থ থাকুন সর্তক থাকুন

Previous articleশিশুর মানসিক বিকাশে পরিবেশ সরাসরি জড়িত
Next articleপ্রযুক্তির প্রতি আসক্তি: কিভাবে কমাবেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here