মানসিক চাপ সামলে চাই আত্মবিশ্বাসী নেতৃত্ব

0
14
বাংলাদেশ পাকিস্তান প্রথম টি টুয়েন্টি, ছবিঃ ইন্টারনেট

গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ছিল সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টি। হোম অব ক্রিকেট খ্যাত, মিরপুরের মাটিতে বাংলার বাঘের ভয়াল থাবা দেখতে লম্বা লাইন পেড়িয়ে গ্যালারীতে গিয়েছিলেন দর্শকরা। ছুটির দিন থাকায় বাসায় কিংবা চায়ের দোকানে রঙ্গিন বাক্সের সামনে ছিলো খেলা দেখার আসর।

প্রথম ম্যাচে আসেনি সেই কাঙ্ক্ষিত জয়। ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে চেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু কোথাও যেনো পা পিছলে পড়েছে বাংলার টাইগাররা। ব্যাটিং-বোলিং ছাপিয়ে প্রশ্ন উঠছে মাহমুদুল্লাহর অধিনায়কত্ব নিয়ে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে টি-টুয়েন্টি ম্যাচে স্পেশালিষ্ট বোলার হিসেবে নেওয়া হয়েছিল আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে। দলে ফেরার ম্যাচে তার সাথে ঘটে গেছে নির্মম এক রসিকতা। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ১৯ ওভারে বল হাতে পাননি বিপ্লব। শেষ ওভারে যখন প্রয়োজন মাত্র ২ রান। তখন বল হাতে এগিয়ে আসলেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। অথচ জাতীয় দলে ও আশেপাশে থাকা একমাত্র লেগ স্পিনার বিপ্লব। স্পেশালিষ্ট এই বোলারকে কেন আগে আনা যায়নি বোলিংয়ে! কারণ ব্যাটার দুইজনই ছিলেন বাঁহাতি!

রীতিমতো হাস্যকর ব্যাখ্যা। এটা ঠিক যে, বাঁহাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে লেগ স্পিনার কিংবা বাঁহাতি অফ স্পিনাররা স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না। তাই বলে তাদের বোলিং দেওয়াই যাবে না, এমন কোনো কথা নেই।

চলুন একটু ইতিহাসের পাতায় নজর দেই। ক্রিকেটের ইতিহাসে কিংবদন্তি লেগ স্পিনার অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন। টেস্টে ৭০৮ উইকেটের পাশাপাশি ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২৯৩ উইকেট। মোট আন্তর্জাতিক উইকেট সংখ্যা ১০০১টি। এর মাঝে ২৪০টি আন্তর্জাতিক উইকেট বাঁহাতি ব্যাটারদের! অবাক হবেন না! ২৪০ বার বাঁহাতি ব্যাটারের উইকেট ভেঙ্গেছেন এই লেগ স্পিনার।

ভাবুন তো, শেন ওয়ার্ন যদি মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে খেলতেন তবে কী কিংবদন্তী হতে পারতেন? এই প্রশ্ন করার একমাত্র কারণ, অধিনায়কের একটি সিদ্ধান্ত। যেখানে ক্রিজে দুই বাঁহাতি ব্যাটার ফখর জামান ও খুশদিল শাহ থাকায় বল হাতে পাননি স্পেশালিষ্ট হিসেবে দলে ডাক পাওয়া লেগ স্পিনার বিপ্লব। তাহলে কীভাবে শেন ওয়ার্ন পেতেন ২৪০ উইকেট!

অথচ লেগ স্পিনাররা যথারীতি উইকেট শিকারী বোলার। পাওয়ারপ্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান যখন প্রবল চাপে, তখন বিপ্লবকে আনায় যেতো বোলিংয়ে। এবারই প্রথম নয়, সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেও বাঁহাতি ব্যাটারের অজুহাতে সাকিবকে বোলিংয়ে আনেননি মাহমুদউল্লাহ।

ক্রিকেটে ব্যাটিং বা বোলিংয়ের ক্ষেত্রে ডানহাতি-বামহাতি কম্বিনেশনের একটা ব্যাপার থাকে। তাই বলে সেটাই চিরন্তন সত্য নয়। তেমনটা হলে তামিম-ইমরুল বাংলাদেশের সেরা ওপেনিং জুটি হতো না। শচীন টেন্ডুলকার আর রাহুল দ্রাবিড়ের জুটিও ক্রিকেট ইতিহাসে অমর হয়ে থাকত না। অনিল কুম্বলে কিংবা আব্দুল কাদিররা ক্রিকেট ইতিহাসে কিংবদন্তির আসন নিতে পারতেন না। বাবর-রিজওয়ান কিংবা রোহিত-লোকেশরা দলে একসঙ্গে সুযোগই পেতেন না! ওপেন করা তো দূরের কথা!

শেষ হওয়া বিশ্বকাপে নখরবিহীন বাঘের থাবা খুঁজে দেখেছিলো দর্শক। গতকালের ম্যাচেও বাঘেদের দলনেতার সু-কৌশলের অভাবেই হয়ত নিজেদের মাটিতে লজ্জার হার পেয়েছে বাংলাদেশ। মানসিকভাবে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বেই সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখবে বাংলা কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমী।

উপায় একটাই বেরিয়ে আসতে হবে মুখস্তবিদ্যা থেকে, মানসিক চাপ সামলে আত্মবিশ্বাসী নেতৃত্বে এগিয়ে যেতে হবে। মাহমুদুল্লাহ পারবেন- কোটি ভক্তের বিশ্বাস যে তার কাঁধেই।

লিখেছেন শরীফুল সাগর।

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে

“মনের খবর” ম্যাগাজিন পেতে কল করুন ০১৮ ৬৫ ৪৬ ৬৫ ৯৪

 

Previous articleকিছুই মনে রাখতে পারি না
Next articleবিনোদন যখন শিক্ষার মাধ্যম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here