ব্রণ হওয়ায় মানসিক উদ্বেগ এবং মুক্তির উপায়

ব্রণ হওয়ায় মানসিক উদ্বেগ এবং মুক্তির উপায়

ব্রণ হওয়া কোন অস্বাভাবিক ঘটনা নয় বরং শরীরের বিকাশ ও পরিবর্তনের সাথে সাথে এটিও একটি অতি স্বাভাবিক ঘটনা। তাই ব্রণ নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে স্বাভাবিক ভাবে একে মেনে নিতে হবে।

ব্রণ সাধারণত বয়ঃসন্ধি কালে এবং কিশোর বয়সীদের মাঝে অধিক পরিমাণে হতে দেখা যায়। স্বাভাবিক হলেও এর আধিক্য তাদের তীব্র মানসিক পীড়ার কারণ হয়ে ওঠে। অনেক সময় বহু প্রচেষ্টার পরেও এই সমস্যার সমাধান অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করার প্রয়াস করা যেতে পারে। কিন্তু এটি সব সময়ই যে সফল হবে সেটি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। তবে ব্রণ নিয়ে যে উদ্বিগ্নতা তাদের মাঝে সৃষ্টি হয় সেটি আমরা আমাদের মানসিকতা এবং চিন্তা ভাবনায় পরিবর্তন নিয়ে এসে দূর করতে পারি।

বয়ঃসন্ধিকালে যখন প্রথম ব্রণ নামক সমস্যাটির সাথে আমাদের প্রথম পরিচয় হয়, তখন অভিভাবকরা বলেন একটু বড় হলেই এই সমস্যাটি দূর হয়ে যাবে। সেই সময়ে কথাগুলো বেশ আশা জাগানিয়া হলেও মানসিক জোর ধীরে ধীরে কমতে থাকে। যখন বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের কথা মতো এই সমস্যাটি দূর হয় না।

তখন বিষয়টি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয় যে আসলে এটি কখনোই দূর হবে না বরং এর সাথেই জীবন যাপন করতে হবে। এই সম্পূর্ণ গল্পটি অনেকের জীবনেরই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সব থেকে বড় সমস্যাটি তখন হয় যখন দেখা যায় তার বয়সী অন্য কারও হয়তো এতোটা সমস্যা হচ্ছে না।

অন্যদিকে অনেক ডাক্তার দেখিয়ে এবং অনেক রকম চিকিৎসা করিয়েও হয়তো একজনের এই সমস্যা যাচ্ছেই না। আয়নায় নিজেকে দেখলে সব সময় মনঃকষ্টে ভুগতে হয়। কারণ নিজের সৌন্দর্যের থেকে ব্ল্যাকহেড, ব্রণের দাগ, জেদি সিস্ট ইত্যাদিই বেশী চোখে পড়ে।

এ রকম পরিস্থিতি একজন ব্যক্তির মনোবল এবং আত্মবিশ্বাসের উপর চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং ব্যক্তি সারাক্ষণ এটি নিয়ে অনেক বেশী উদ্বিগ্নতায় এবং বিষণ্ণতায় সময় পার করে। ব্রণে আক্রান্ত সবার মাঝেই যে এমন মানসিক সমস্যা বা চাপের সৃষ্টি হয় সেটি নয়।

তবে যাদের মাঝে এমন মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয় তাদেরকে অবশ্যই এই মানসিক পীড়া থেকে মুক্ত করার প্রয়াস করতে হবে। কারণ এসব মানসিক সমস্যাকে বাড়তে দিলে সেটি ধীরে ধীরে আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। এমনকি তার মাঝে একাকীত্ব এবং আত্মহননের মতো নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে।

একজন ব্রণে আক্রান্ত ছেলে বা মেয়েকে কখনোই এটি নিয়ে লজ্জা দেওয়া উচিৎ নয়। এমন ভাবে তার সাথে কথা বলা উচিৎ নয় যাতে করে তার মনে হয় যে, ব্রণ তার জন্য একটি অভিশাপের মতো। অনেকেই ব্রণ নিয়ে এমন ভাবে কথা বলেন যে এটি তার একটি অপরাধের ফল। আর এ ধরণের আচরণ কোনভাবেই কাম্য নয়।

তাই শুধু ব্রণে আক্রান্ত ছেলে বা মেয়েটির নয় বরং সবার মাঝেই মানসিকতার পরিবর্তন নিয়ে আসা প্রয়োজন। যা ব্রণের মতো স্বাভাবিক বিষয়টিকে স্বাভাবিক ভাবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করবে।

কিশোর কিশোরী বা তদূর্ধ ব্রণে আক্রান্ত সবাইকেই এটি মনে রাখতে হবে যে, সৌন্দর্য একটি আপেক্ষিক বিষয়। নিজেকে কখনোই শুধুমাত্র ব্রণের জন্য গুটিয়ে রাখা বা অসুন্দর হিসেবে কল্পনা করা উচিৎ নয়। মনে রাখতে হবে এটি কোন সীমাবদ্ধতা নয় বরং জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ। সবার শারীরিক গঠন এবং অবস্থা যেমন সমান নয়, তেমনি ব্রণ কার কতোটা হবে এবং কোন বয়স পর্যন্ত থাকবে সেটি প্রাকৃতিক এবং ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন। এর উপর ঐচ্ছিক কোন প্রভাব নেই।

তাই এটি নিয়ে বিষণ্ণতা বা হতাশায় না ভুগে একে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিয়ে প্রাণোচ্ছল জীবন যাপন করতে হবে। নিজেকে গুটিয়ে না রেখে ব্রণকে ইতিবাচক মানসিকতার সাথে স্বাদরে গ্রহণ করে নিতে হবে।

লিংক: https://www.psychologytoday.com/intl/blog/helping-humanity-thrive/202107/how-escape-acne-anxiety

অনুবাদ করেছেন: প্রত্যাশা বিশ্বাস প্রজ্ঞা

স্বজনহারাদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য পেতে দেখুন: কথা বলো কথা বলি
করোনা বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নির্দেশনা পেতে দেখুন: করোনা ইনফো
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক মনের খবর এর ভিডিও দেখুন: সুস্থ থাকুন মনে প্রাণে 

Previous articleইউএস-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের নতুন অধ্যক্ষ ব্রি. জে. ডা. আজিজুল ইসলাম
Next articleসুস্থ বিনোদন দিতে পারে মাদক মুক্ত জীবন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here